দূর থেকেই দেখলেন আমজাদ সাহেব। লাল কালো হরফে লেখা অক্ষরগুলো সকালের সোনালি রোদে কেমন চিক্চিক্ করছে। সাম্রাজ্যবাদ ধ্বংস হোক।

বাজারে এক মেছুনীর সাথে ঝগড়া করে মেজাজটা এমনিতেই বিগড়ে ছিল আমজাদ সাহেবের। তার ওপর সদ্য-চুনকাম-করা বাড়ির দেয়ালে এহেন পোস্টার দেখে রাগে থরথর করে কেঁপে উঠলেন তিনি। বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছেলেকে ডাকলেন। আনু-উ-উ। আনুর দেখা নেই। বাবার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে লাটিম আর মার্বেল হাতে বেরিয়ে পড়েছে সে সেই ভোরে। কানু এসে বলল, কি বাবা?

তোকে কে ডেকেছে। আনু কোথায়? চোখ রাঙিয়ে ছেলের দিকে তাকালেন আমজাদ সাহেব। এত কষ্ট করে, বাড়িওয়ালার হাত-পা ধরে হোয়াইটওয়াশ করালাম। দেয়ালে লিখে দিলাম বিজ্ঞাপন লাগিও না। তবুও-তবুও দেখ না পাজিগুলোর যদি একটু কাণ্ডজ্ঞান থাকত। যতসব নচ্ছার কোথাকার।

আমায় গাল দিচ্ছ কেন। ওগুলো কি আমি লাগিয়েছি নাকি? মুখ ভার করল কানু।

ছেলের কথায় আরো ক্রুদ্ধ হলেন আমজাদ সাহেব। শুয়ার কোথাকার। তোর কথা কে বলছে? বলছিলাম, যে বাঁদরগুলো এসব পোস্টার লাগায় তাদের ধরতে পারিস না? ধরে জুতোপেটা করে দিতে পারিস না তাদের। থাকিস কোথায়? রীতিমতো হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন আমজাদ সাহেব।

পাশের বাড়ির আফজাল সাহেব বাইরে চিৎকার শুনেই বোধ হয় বেরিয়েছিলেন। বললেন, কী ব্যাপার আমজাদ সাহেব। এই সকালবেলা-।

আর বলবেন না সাহেব, সাধে কী আর চেঁচাচ্ছি। এসেই দেখুন-না একবার। বলে আঙুল দিয়ে দেয়ালের পোস্টারটাকে দেখালেন আমজাদ সাহেব।

ও। এ আর কী। ও তো সব জায়গায় লাগিয়েছে ওরা। শহরটাকে একেবারে ছেয়ে ফেলেছে সাহেব। তারিফ করতে হয় এই ছেলেগুলোর।

আঁ! আপনি বলছেন কী? রীতিমতো অবাক হলেন আমজাদ সাহেব। আপনি ওই ছেলেগুলোর তারিফ করছেন?

তারিফ করব না? আফজাল সাহেব বললেন। দেশের মধ্যে সাচ্চা কেউ যদি থেকে থাকে তো ওরাই আছে। ওরাই লড়ছে দেশের স্বার্থের জন্য।

You Might Also Like

03 Comments

Leave A Comment

Don’t worry ! Your email address will not be published. Required fields are marked (*).

Get Newsletter

Advertisement

Voting Poll (Checkbox)

Voting Poll (Radio)

Readers Opinion