বাংলা বর্ণমালার সংস্কার
বাংলা ভাষায় যে বর্ণমালা বর্তমানে প্রচলিত তা মূলতঃ সংস্কৃত বর্ণমালার অনুকরণে। প্রত্নবৈদিক (Proto-Vedic বা সাধারণ নামে Indo-European বা মূল Aryan ভাষার) ভাষা যুগে প্রত্নপ্রাকৃত বা প্রত্নসংস্কৃত ভাষার কি বর্ণমালা ছিল এবং বর্ণগুলির উচ্চারণ কি ছিল তা বহুকাল পরে যথাযথভাবে জানা সম্ভব নয়। গুরু পরম্পরা বা প্রাচীন ব্যাকরণ এ বিষয়ে নানা সহায়তা করলেও মতভেদ ও পথভেদ রয়েই গেছে। বেশী কি আধুনিক কালের বহু ইংরেজী বর্ণের (যেথা f, s, r প্রভৃতি) উচ্চারণও অনেকের অজানা বা কখনও কখনও অশুদ্ধ হয়। আমাদের বর্ণমালায় যা বর্ণ আছে সেগুলির অনেকের প্রকৃত উচ্চারণ (যেমন: অন্ত্যস্থ ব, ণ, স, ষ প্রভৃতি) আমাদের অনেকের জানা নেই বা উচ্চারণও করি না বা দোষদুষ্ট করি; তাছাড়া এমন অনেক ধ্বনি আমরা উচ্চারণ করি (যেমন অ্যা; ইংরাজী z ধ্বনির মত শব্দ; য-স্থলে জ ইত্যাদি) বা উচ্চশিক্ষায় বা ভাষান্তরশিক্ষায় এমন ধ্বনির ব্যবহার করি (যেমন: q এবং ও—উভয়েরই হ্রস্ব-দীর্ঘ ইত্যাদি) যার প্রতীক বাংলা-সংস্কৃতে নেই বা প্রায় নেই। উক্ত ইন্দো-ইউরোপীয় বা আর্যভাষার শাখা-প্রশাখা রূপে সংস্কৃত, ইরাণী (পার্শী), গ্রীক্, লাতিন, জর্মন, ইংরাজী, বাংলা প্রভৃতি গণ্য। সংস্কৃত ভাষার সংগে যার নানাদিকে সাদৃশ্য সেই আর্যভাষা।
বাংলা ভাষা উত্তর ভারতের বহু ভাষার মতই পরবর্তী অপভ্রংশ ও তার মাতৃস্থানীয় (শেষাবস্থার) প্রাকৃত ভাষা হতেই প্রধানতঃ রূপান্তরিত, ফলে বর্ণ ও বর্ণধ্বনি সাধারণ ও ব্যবহারিক বাংলায় তথা উক্ত ভাষাদ্বয়েও অনুচ্চারিত বা কাজে লাগে না। সে জন্য অনেকে বাংলা বর্ণমালাকে সংক্ষিপ্ততর করার পক্ষপাতী। প্রাথমিক বা নিম্ন বা সাধারণ স্তরে শিক্ষার জন্য ঐরূপ আন্দোলনে আমার দুঃখ বা তেমন দুঃখ হয় না, যদিও নানাদিক ভেবে ছোট না করাই ভাল বলে মনে করি। তবে উচ্চস্তরে বিশেষতঃ গবেষণাদির জন্য নানা ধরণের কৃত্রিম বর্ণ ও স্বরাঘাত-চিহ্ন সৃষ্ট হওয়া অবিলম্বে বাঞ্ছনীয় বলে মনে করি। ইংরাজী প্রভৃতি সমৃদ্ধভাষায় নানা চিহ্ন বসিয়ে ও নানা কৃত্ৰিম বর্ণের সৃষ্টি করে এই অভাব দীর্ঘকাল ধরে অনেকটা পূরণ করা হচ্ছে; কিন্তু বাংলা প্রভৃতি এ বিষয়ে প্রায় অনড়-অচল হয়ে আছে। গ্রীক্-রুশ-আরবী-চীনা প্রভৃতি ভাষার বিশেষ ধ্বনি যদি বাংলায় একেবারে অনুচ্চারিত থাকে বা সেগুলির প্রতীক বর্ণ আমরা যদি না সৃষ্ট করি তবে ঐ ভাষা বিষয়ে বাংলায় বেশ কিছু লিখতে বা উদ্ধৃতি দিতে আমরা পারব কেন?
এখন (১) প্রাকৃতে তথা পালিতে কতগুলি বর্ণ কম আছে, (২) সংস্কৃত-বাংলা বর্ণের ধ্বনির ব্যাখ্যায় কি ত্রুটি আছে বলে মনে করি, সে সম্বন্ধে কিছু আলোচনা করব। সংস্কৃত অপেক্ষা প্রাকৃত ও পালিতে বর্ণসংখ্যা অল্প, অপভ্রংশে ও সংখ্যা অল্প; অথচ বর্ণসংস্কার করতে গেলে বর্ণের ধ্বনির বা ব্যাখ্যার দোষত্রুটি সম্বন্ধে আরও কিছু আলোচনার বোধহয় প্রয়োজন আছে।
স্থূলত: পালি ও প্রাকৃতে ঋ, ৯, ঐ, ঔ এবং শ, ষ ও : —এগুলির অস্তিত্ব নাই। পালিতে ন ও ণ দুই-ই আছে, প্রাকৃতে ন, র অস্তিত্ব নাই বল্লেই চলে। পালি ভাষাকে কেউ কেউ প্রাকৃতের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করেন এবং ফলে রাজা অশোকের পালি ভাষার অনুশাসনগুলিকে প্রাকৃত ভাষায় লেখা বলে মনে করেন। প্রাকৃতের ব্যাপকতর অর্থেই তা বলা যায়। পুরাতন বা অঞ্চলীয় বেদাংশ বা বৈদিক ব্যাকরণের নিয়মের সংগে প্রাকৃত ভাষা ও ব্যাকরণের ঘনিষ্ঠতা ও সংস্কৃতের সংগে পালির ঘনিষ্ঠতা নিবিড় বলে মনে হয়।
এবারে কয়েকটা বর্ণের বিশেষত্ব সম্বন্ধে নিজের বক্তব্য বলি। কিছুটা অদ্ভূত ও ত্রুটিপূর্ণ হয়ত হবে, কিন্তু স্থূল বক্তব্য হয়ত বহুস্থলে সত্য।
অ ও আ:—অ-কে সংস্কৃতাদিতে হ্রস্বস্বর বলা হয়। আর্যভাষা লাতিন ও গ্রীকে ‘A’ বা এ বা আল্ফার উচ্চারণ মুলে অ ছিল—কেউ কেউ বলেন; অনেকেই আ উচ্চারণ করেন, যেমন ‘অল্ফ’ না ব’লে ‘আল্ফা’, এইভাবে 'Ars Longa ..,’-কে ‘আর্স
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment