ভয়ংকর আন্তর্জাতিক অপরাধী-চক্র
সি আই এ-র অপরাধমূলক কার্যকলাপ গত কয়েক বছর ধরে মাঝে মাঝেই সংবাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ ঐসব অপরাধের কিছু কিছু এই পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়েছে। সি আই এ-র অপরাধের রেকর্ড গত বছরে আরও স্ফীতকায় হয়ে উঠেছিল। সেই দিক থেকে এই “গোয়েন্দা সম্প্রদায়টি”র ইতিহাস পর্যালোচনা করার প্রয়োজন আছে।
এই মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটির সৃষ্টি হয় ১৯৪৭-এর সেপ্টেম্বর মাসে। একেবারে গোড়া থেকেই-এর হাতে যথেষ্ট ক্ষমতা ও সম্পদ সমর্পণ করা হয় ৷ বলতে গেলে, এর ভবিষ্যৎ অন্তর্ঘাতী কার্যকলাপের কর্মসূচী আগে থেকেই স্থির হয়ে গিয়েছিল। ১৯৪৮ সালে মার্কিন রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এই মর্মে একটা গোপন নির্দেশ জারি করেছিল যে, সি আই এ বিদেশী রাষ্ট্রে গুপ্ত রাজনৈতিক কার্যকলাপ চালাতে পারবে, কিন্তু এটা এমনভাবে করতে হবে যাতে প্রয়োজন হলেই মার্কিন সরকার এই ধরনের কার্যকলাপের সঙ্গে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিতে পারে (এটা ঐ সরকার প্রায়ই করেছে)। ১৯৪১-এ সি আই এ সম্পর্কে একটি বিশেষ আইনে একে সমস্ত মার্কিন আইনের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া হয়। এই আইনের বলে সি আই এ সম্পর্কিত ব্যাপারে কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির হস্তক্ষেপের অধিকার নাকচ করা হয় এবং এর কর্তারা যথেচ্ছ কার্যকলাপের অধিকার পায়।
মার্কিন পত্র-পত্রিকার হিসেব অনুযায়ী ওয়াশিংটনের অদূরে অবস্থিত সি আই এ-র সদর দপ্তরের কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ১৬,৫০০। এর অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার, বিশেষ করে পেন্টাগনের বিশাল কর্মীর সংখ্যা যোগ করলে সংখ্যা দাঁড়াবে ১৫০,০০০। তাছাড়া সি আই এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে “লিবার্টি” ও “ফ্রি ইউরোপ”-এর মতো কুখ্যাত রেডিও স্টেশন—যাদের কাজ হল সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর বিরুদ্ধে ক্রমাগত অন্তর্ঘাতী প্রচার অভিযান চালিয়ে যাওয়া। এছাড়াও সি আই এ-র হাতে রয়েছে স্বল্পজ্ঞাত জাল বিমান পথ যা কয়েকটি মহাদেশ জুড়ে কাজ করছে। এর কর্মচারীর সংখ্যা হল প্রায় ১৮,০০০।
সি আই এ-র ৪টি প্রধান বিভাগ রয়েছে : তথ্য, গবেষণা, পরিকল্পনা ও সমর্থন (প্রশাসন)। পরিকল্পনা বিভাগ হল সংস্থাটির “চিন্তা-কেন্দ্র”। যে সমস্ত গুপ্ত কার্যকলাপে সি আই এ যথেষ্ট বদনাম কুড়িয়েছে, তার সমস্তটাই এখানকার ভাবনা-চিন্তার ফল। অ্যালেন ডালেস, রিচার্ড হেম্স ( ১৯৬৬-৭৩), উইলিয়াম কোলবি সাহেবের (১৯৭৩-৭৬) মতো অধিকাংশ সি আই এ-প্রধান একদা পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান ছিলেন।
বিগত তিরিশ বছরের ইতিহাসে সি আই এ-র বহু প্রধান কর্মকর্তা ছিল। এর মধ্যে সুপরিচিত ব্যক্তি হলেন অ্যালেন ডালেস। সবার চাইতে বেশি সময়—ন-বছর ধরে তিনি ছিলেন এর প্রধান কর্মকর্তা। ডালেস এর অন্যতম স্রষ্টা এবং ১৯৫৩ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত এর পরিচালক। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের হিংস্রতম শত্রু এই ডালেস এবং ঠাণ্ডাযুদ্ধের পর্বে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো এবং কমিউনিস্ট ও শ্রমিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে ব্যর্থ জেহাদের নেতা ৷
যেখানে সি আই এ-র বার্ষিক সরকারি বাজেটের সামগ্রিক পরিমাণ হচ্ছে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার, সেখানে সমগ্র “গোয়েন্দা গোষ্ঠীর” বাজেটের অঙ্ক ৬০০ মিলিয়নেরও বেশি। এই রকম বিপুল অর্থভাণ্ডার নিয়ে সি আই এ পুলিসের বড়কর্তা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপ্রধান পর্যন্ত বিদেশী নেতাদের ঘুষ দিয়ে বশে আনতে পারে। নির্বাচন অভিযানে এ বেপরোয়াভাবে অর্থ ব্যয় করে, আবার বিরোধী পক্ষের প্রার্থীদের মুখ বন্ধ করার জন্যে নানারকম গোপন পদ্ধতিরও আশ্রয় নেয় ৷ সি আই এ গোপনে নিজের কার্যকলাপ চালাবার জন্যে এবং “সঠিক লোকের” কাছে অর্থ হস্তান্তরের জন্যে ক্যাথলিক চার্চ, এ এফ এল-সি আই ও (দক্ষিণপন্থী ট্রেড ইউনিয়ন সংস্থা) ও তেল কোম্পানিগুলোকে কাজে লাগায়। ইতালির প্যানোরমা পত্রিকা ১৯৭৭-এর মে মাসে লিখেছিল যে, কুখ্যাত লকহীড কেলেংকারিতে প্রায় ক্ষেত্রেই ঘুষের টাকা এসেছিল সি আই এ-র কাছ থেকে এবং যে ইতালীয় আইনজীবী কোম্পানির তরফে ঐ টাকা বিলি করেছিল, সে রোমের সি আই এ প্রধান রকি স্টোনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত।
এসব যাই হোক না
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment