পুস্তক পরিচয় : সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ
বন্ধুবর রেবতী বর্মণ আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। তার বিয়োগোত্তর প্রকাশনী ‘সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ’ তার সর্বশেষ গ্রন্থ। স্বভাবতই এই গ্রন্থ-সমালোচনার সময় আগে রেবতীবাবুর বিয়োগ-ব্যথাই তার অগণিত বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে বড় হয়ে উঠবে। তাই অনেকটা হৃদয়াবেগ সংযত করেই আলোচনায় অবতীর্ণ হচ্ছি।
‘সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ’ মার্কসবাদী দৃষ্টিতে ইতিহাস বিশ্লেষণ করার মহৎ প্রচেষ্টা। বাংলা ভাষাতে অমিত সেনের ‘ইতিহাসের ধারা’র পরে এইরূপ সার্থক গ্রন্থ আর সম্ভবত প্রকাশিত হয়নি। ‘ইতিহাসের ধারা’য় মানব-সমাজের বিভিন্ন যুগের ধারা বিভাগ ও বিবর্তনের সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ অসাধারণ-রকমের সহজ ভঙ্গিতে বলা হয়েছে ৷ ‘সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ’-এ সে ধারাকে তথ্যসম্ভারে ও ঘটনাপ্রবাহে আরো সমৃদ্ধিশালী অথচ প্রাঞ্জলভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, প্রাচীন যৌথসমাজ কী অবস্থার মধ্যে রূপান্তরিত হল—ব্রোঞ্জের আবিষ্কার সামরিক, আর্থনীতিক দিক থেকে কী রূপান্তর ঘটাল, কেমন করে ‘সমাজের অভ্যন্তরস্থ একক ব্যক্তিদের মধ্যে অসমতা বৃদ্ধি’ পেল, ফলে ধনী-নির্ধনের সৃষ্টি হল, ক্রীতদাসের আমদানি শুরু হল, পুরুষের অধিকার বাড়ল, প্রাচীন সামন্ততান্ত্রিক রাজতন্ত্র কী করে জন্মলাভ করল এশিয়ার বুকে বড় নদীর উপত্যকায়—এর বিশ্লেষণ চমৎকারভাবে দেওয়া হয়েছে ৷
তৃতীয়ত, ‘প্রাচীন সভ্যতার শ্রেণীরূপ’ অধ্যায়টি সত্যিকারের প্রথমশ্রেণীর অবদান। ইতিহাসের ছাত্রমাত্রেই এই অধ্যায় থেকে প্রাচীনকালে ‘ধনী-দরিদ্র’ শ্রেণী-সংগ্রামের অনেক গৌরবোজ্জল কাহিনী এখানে খুঁজে পাবেন। বেবিলন-এর সভ্যতায় রাজা, জমিদার, পুরোহিত ও দাসদের মধ্যে সংগ্রামে দাসরা সবসময় প্রধান অংশ গ্রহণ করেছিল। লাগাস-এর বিদ্রোহের ফলে উকাগিন রাজা হন ও সবার সঙ্গে দাসদেরও স্বাধীনতা দেন। মিশর-এর ইতিহাসে কৃষক-বিদ্রোহের কথাও এখানে তিনি দেখিয়েছেন, একবার খীষ্টের জন্মের ২৫০০ বছর আগে, আর একবার আঠারো শ বছর আগে, বিদ্রোহ ব্যাপক আকার ধারণ করে। যদিও এখানে কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার উল্লেখ করা নেই, তবু, সময়কাল দেখে মনে হয়, পিরামিড নির্মাতাদের শেষ রাজবংশের (৬ষ্ঠ রাজবংশ) রাজা দ্বিতীয় পেপি-র পরে যে রাষ্ট্র-বিপ্লব ঘটল তার মূলে ছিল ১ম কৃষক-বিদ্রোহ। আর দ্বাদশ রাজবংশের শেষদিকে এশিয়ার হিকসস আক্রমণের প্রারম্ভে মিশরের বুকে যে রাজনৈতিক ঝড় উঠল তার প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন যুফ্নি (Yufni ); (Breasted — History of Egypt.)।
সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ
লেখক: রেবতী বৰ্মণ
প্রকাশক: ন্যাশনাল বুক এজেন্সি লিমিটেড, কলিকাতা
মিশরের সভ্যতায় কারিগর ও ক্রীতদাসের অবস্থা সম্পর্কে প্রাচীন গ্রীক- ঐতিহাসিক ডাওডোরস-এর (Diodorus) বর্ণনা প্রণিধানযোগ্য, “...As those workers can take no care of their bodies and have not even a garment to hide their nakedness, there is no one who seeing these luckless people, would not pity them because of the excess of their misery, for there is no forgiveness or relaxation at all for the sick or the maimed or the old or for women's weakness but all with blows are compelled to stick their labour until worn out, they die in this servitude.”
কিন্তু ঐতিহাসিক এরম্যান তাঁর ‘Life’ নামক গ্রন্থে, ও ঐতিহাসিক মেসপেরো (Maspero ) ‘Struggle’ নামক গ্রন্থে শ্রমিক ধর্মঘট ও কিসান-বিদ্রোহের যে ঘটনা বিবৃত করেছেন তাতে সহজেই প্রতীয়মান হয় যে শোষিত জনসাধারণ অত্যাচার-উৎপীড়নকে নীরবে গ্রহণ করেনি। তারা বারে বারে বিদ্রোহের ধ্বজা উড়িয়েছে।
এরম্যান এক জায়গায় লিখছেন, “...Strikes are frequent, Once, their pay being long overdue the workmen besieged the overseer and threatened him. 'We have been driven here by hunger and thirst'—they told him, We have no clothes, no oil, no food. Write to our Pharaoh on the subject and write to the governor who is over us, that they may give us something for our sustenance.”
মেসপেরো গ্রীক উপাখ্যান থেকে এক দাস-বিদ্রোহের বর্ণনা দিয়েছেন:
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment