ভারতবিদ বারান্নিকফ্
রুশ দেশে গত দেড়শো বছর ধরে ভারতীয় সংস্কৃতি, ভাষা, সাহিত্য ইত্যাদির গবেষণা ও আলোচনা চলছে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে গেরাসিম লেবেডেফ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে মিনায়েফ্ ছাড়া উনিশ শো সতেরো সালে নভেম্বর বিপ্লবের পূর্বেকার ভারতবিজ্ঞানী রুশ পণ্ডিতদের মধ্যে কেউই আধুনিক ভারতের ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস ইত্যাদির দিকে নজর দেননি। আলেক্সি পেত্রোভিচ্ বারান্নিকফ প্রথম দেশীয় পণ্ডিত যিনি সংস্কৃতের পণ্ডিত হওয়া সত্ত্বেও আধুনিক ভারতের ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণার জন্য আজীবন কাজ করে গিয়েছেন। আধুনিক ভারতের সঙ্গে সোবিয়েতবাসীর গভীর পরিচয়ের কৃতিত্ব বহুলাংশে তাঁরই প্রাপ্য। আধুনিক ভারতীয় ভাষা ও সাহিত্যের জন্য এতবড় কাজ আর কোনো দেশে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান করেনি। বারান্নিকফের কাজ সব দিক দিয়ে অতুলনীয়। তাঁর মৃত্যুতে আমরা ভারতবাসীরা এক অদ্বিতীয় পণ্ডিত এবং পরম বন্ধু হারিয়েছি।
আলেক্সি পেত্রোভিচ্ বারান্নিকফ উক্রাইন প্রজাতন্ত্রের পোলতাভা জেলায় জোলোতনোশা শহরে এক ছুতোর মিস্ত্রির ঘরে ২১শে মার্চ, ১৮৯০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ৯৩ বছরের বৃদ্ধ পিতা এখনো বেঁচে আছেন ৷ মা পুত্রের অমর যশপ্রাপ্তি না দেখে ১৯১৪ সালে মারা যান। বাল্যকালে জন্মস্থানে ছোট স্কুলে তিনি শিক্ষালাভ করেন কিন্তু অর্থাভাবে তিনবছর পরে তাঁকে স্কুল ছাড়তে হয়। তিনি বাড়িতে থেকে নিজে নিজেই লেখাপড়া করতে থাকেন এবং ফ্রেঞ্চ, জার্মান, লাতিন, গ্রীক নিয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা উত্তীর্ণ হন কুড়ি বছর বয়সে।
জীবিকা এবং বিদ্যা অর্জনের জন্য তিনি প্রাচীন রুশ সংস্কৃতির কেন্দ্র কিয়েফ নগরে যান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। জীবিকার্জনের জন্য তিনি এক ধনীর পুত্রকে পড়াতেন। এখানে পর্বের ভাষাগুলির সঙ্গে তিনি প্রাচীন রুশীয় (স্লাভ্) লিথুয়ানিয়ান, প্রাচীন জার্মান, প্রাচীন ফ্রেঞ্চ, ইতালিয়ান, পহ্লভী এবং সংস্কৃতও পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি জিপ্সি ভাষা শেখার জন্য যাযাবর জিপসিদের তাঁবুতে যেতেন, তাঁদের সঙ্গে নাচগান, খাওয়া-দাওয়া করতেন। জিপ্সিরা তাঁর মুখে তাদের ভাষার জ্ঞান ও উচ্চারণ শুনে বলে উঠত, “তু রোম্” (তুই জিপ্সি)। তিনি জিপ্সিভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ ছিলেন। ১৯১৪ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ পরীক্ষা সম্মানের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। তাঁর তিনশো পৃষ্ঠার নিবন্ধ “স্লাভ লিথুয়ানিয়ান ও জার্মান ভাষার ধাতু-রূপ”-এর জন্য তিনি ম্যাজিস্টার (এম-এ’র তুল্য) উপাধি, ছাত্রবৃত্তি ও স্বর্ণপদক লাভ করেন।
উচ্চতর জ্ঞানলাভের জন্য তিনি সেন্ট পিটার্সবার্গ (বর্তমান লেনিনগ্রাদ) বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রীক, লাতিন এবং তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব এই বিষয়গুলি নেন। সৌভাগ্যক্রমে ওল্দেনবুর্গ, স্তেরবাত্স্কি, গোলমান্দ-এর মতো দিগগজ পণ্ডিতদের অধ্যাপকরূপে পান। ছাত্রবৃত্তির টাকায় তাঁর পড়ার খরচ চলে গেলেও বই কেনার জন্য তিনি হাই স্কুলে শিক্ষকের কাজ করতেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের যুগে আস্পেরানত্ (এমএ) পরীক্ষা শেষ করার সময়ে ১৯১৭ সালের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব হয়। শোষকদের জগৎ উলটে যায় এবং বারান্নিকফ-এর মতো শোষিতদের দুনিয়া কায়েম হতে শুরু করে। এই নয়া দুনিয়ায় গরিব ছুতোরের পুত্র বারান্নিকফ-এর চেয়ে আর কে বেশি খুশি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার পরেই তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপকরূপে তাঁকে সামারা (আধুনিক কুইবিশেফ) বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। এখানে চার বছর অধ্যাপনার পর ১৯২১ সালে তিনি লেনিনগ্রাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন এবং তখন থেকে শেষ জীবন পর্যন্ত এখানেই কাজ করেন।
বিপ্লবের পূর্বে ভারতবিজ্ঞানী রুশ পণ্ডিতেরা প্রধানত প্রাচীন ভারতীয় ভাষা ও সাহিত্যের দিকে নজর দিতেন একথা আগেই বলা হয়েছে। ভারতবিজ্ঞানের ক্ষেত্র সীমিত ছিল। বিপ্লবের পর অবস্থা পরিবর্তিত হল। ১৯১৮ সালে সোবিয়েত সরকার প্রাচীন ভারতীয় ভাষা ও সাহিত্যের সঙ্গে আধুনিক ভারতীয় ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস, অর্থনীতি ইত্যাদির দিকেও নজর দেন। ১৯২০ সালে সোবিয়েত সরকারের চেয়ারম্যান লেনিনের নির্দেশে মস্কো ও লেনিনগ্রাদে প্রাচ্যবিদ্যা পরিষদ স্থাপিত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে এশিয়ার ঔপনিবেশিক দেশগুলিতে স্বাধীনতা সংগ্রামের যে জোয়ার আসে তার বিষয়ে প্রত্যক্ষ পরিচয় লাভের জন্য জীবিত প্রাচ্যভাষা পরিষদ ও স্থাপিত হয়। সোবিয়েত দেশের জনগণ ভারতীয় রাজনীতির সঙ্গে আধূনিক
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment