জীবাণু : সুপার ভিলেন
রোগ যেন প্রাণী জগতের, বিশেষ করে মানব জাতির জীবন কাব্যের এক মহাভিলেন। প্রতিরোধক, প্রতিষেধকের যাবতীয় ক্রিয়া-করণ অনুসরণ করার পরও এর থেকে নিস্তার তো মেলেই না অধিকন্তু টুটি চেপে সে বিনির্মাণ করে জীবন কাব্যের ট্রাজিক পরিণতি। কখনও সে রূপ ধারণ করেছে জ্বর সর্দি, কখনও বা যক্ষা, কলেরা, ক্যান্সার ইত্যাদি। কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, কৃষক, আমলা, কামলা, রাজন, সন্ন্যাসী, মৌলানা, যাজক যেন কিছুতেই কোন জাত-পাতের, ধর্ম-কর্মের, শ্রেণি-পেশার ধার সে ধারে না এমনই এক শক্তিধর। সে সমস্ত রোগের কারণ আজ আমাদের অনেকের কাছে অজানা না থাকলেও এ নিয়ে মানুষের মধ্যে যুগে যুগে রচিত হয়েছে বিভিন্ন ধোঁয়াশাময় গাল-গল্পের, ব্যাখ্যা নিয়ে ঘটেছে বহুমুখী দ্বন্ধ-সংঘাত। তবুও সত্য অদ্বিতীয়।
সে বহুদিন আগের কথা। বসন্ত, যক্ষা, কলেরা রোগে গ্রামকে-গ্রাম, দেশকে-দেশ উজাড় হয়ে যাচ্ছে, এছাড়াও অন্যান্য সমস্ত রোগ যা আজ নস্যি মনে হলেও একসময় তা ছিল ভয়াবাহ আতঙ্কের কারণ, সেসবের আক্রমণে মানুষ নাস্তানাবুদ। যে যার মতো করে ব্যাখ্যা, গল্প ফেঁদে যাচ্ছেন। বেশিরভাগ মানুষ মনে করছেন এ বুঝি দেব-দেবীর অভিশাপ। নিশ্চয় পরম পুজনীয় দেব-দেবীবর্গ তাদের কারও কোনও আচরণে রুষ্ট হয়ে এমন ধ্বংসবাণ তাদের উপর নিক্ষেপ করছেন। কেউ বলছেন ঘোর কলিকাল এসে গেছে এইবার আর নিস্তার নাই। কেউ বলছেন এ পাপের ফল, জিন-পরির আছর। অলৌকিক কারণ মনে করে পরিত্রাণের উপায় খুঁজতে তারা ধন্না দিতে লাগলো সাধু-সন্ন্যাসী কিংবা যার যার ধর্মীয় গুরুদের দ্বারে। আয়োজন করা শুরু করলো বিভিন্ন ধরণের পূজা অর্চনা, দান-খয়রাত এমনকি নরবলী পর্যন্ত। চললো বিভিন্ন প্রকারের ঝাড় ফুঁক, পানি পড়া, তাবিজ পড়া, তুক-তাক ইত্যাদি কোথাও কোথাও কেউ কেউ এসব নিয়ে ব্যাবসাও ফেঁদে বসলেন। তৈরি হলো এর অর্থনৈতিক স্বার্থক্ষেত্র রক্ষার বিভিন্ন কুট-কৌশল, প্রচার-অপপ্রচার। সাধারণ মানুষের সরল বিশ্বাসকে নিয়ে নিষ্ঠুর মুনাফার পাশা খেলা। এদিকে সহস্র মানুষ মরে সাফ। বিভিন্ন প্রকারের খাদ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন উপাদান যেমন- আমিষ, শর্করা, চর্বি, পানি, ভিটামিন, খনিজ লবণ ইত্যাদি যা আমরা আমাদের খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহণ করি তা মানুষের শরীরে তৈরি করে দৈহিক শক্তির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ শক্তিরও, দেখা যেতো হয়ত অনেকদিন ভুগে হাজারে দুই-একজন কোন সাধারণ ব্যাধি থেকে মুক্তি লাভ করেছেন, ঐ সমস্ত প্রতিরোধ শক্তির জন্য সুস্থ হয়ে উঠেছেন তো সবাই বলাবলি শুরু করতো বাবার ঝাড়-ফুঁক কিংবা ঐ সমস্ত পানি পড়ার গুণ। একটা দুইটা এরূপ ঘটনা ঘটলেও সাধারণ মানুষ পড়ে যেত বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচলে। এ সমস্ত ঘটনা থেকে গাঁয়ের অনেক বুদ্ধিমান মরুব্বিরা বিভিন্ন প্রবাদ বলে হাস্যরসও করে থাকতো যেমন- ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে ইত্যাদি। কিন্তু, ভিলেন মহাশয় এ সব মানবেন কেন? সে কোন বিশ্বাস অবিশ্বাসের ধার ধারলো না। তার কর্ম, ধ্বংসযজ্ঞের রাজ সে চালাতেই থাকলো। গোটা মানব জাতিই ক্রমশ নিশ্চিহ্নতার হুমকির মুখে পড়তে থাকলো।
মস্ত এই পৃথিবীর বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ স্রোতে গাঁ ভাসিয়ে দেয়ার কিংবা ধূর্ত মানুষরা তাদের স্বার্থ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যের অনুকূল পরিবেশটা জারি রাখতে চাইলেও, কিছু মানুষ আছেন যারা সমাজের আলো হাওয়া জলে পুষ্ট হয়ে সমাজের প্রতি নিজস্ব দায়বোধটা এড়িয়ে যেতে পারেন না, যারা কঠিন হলেও শত ঘাত প্রতিঘাত সয়েও, এমনকি আত্মস্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে বিশ্ব সভ্যতা পরিবারের রক্ষার দায়িত্বটা নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে সত্য বিষয়টার মুখোমুখি হতে পিছপা না হয়ে বরং ঘটনার পিছনে ধাওয়া করে উদঘাটন করে আনেন এর প্রকৃত কার্য-কারণ। আর তারাই কালে কালে এগিয়ে নিয়ে চলেন অমসৃণ বন্ধুর পথে সমাজ, সভ্যতা, কালের চাকা। রক্ষা করে চলেন মানুষের সবুজ গ্রহ, হাতে হাতে পৌঁছে দেন প্রাণের আলোক মশাল। অন্ধকার তা যত কালোই হোক এ মশাল আলোকে
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment