গাছ পোকা খায়! কী সাংঘাতিক কাণ্ড! তবে কি উদ্ভিদজগতেও আছে মাংসাশী আর নিরামিষাশীর দল? হ্যাঁ আছে বটে। আজ আমরা সেই মাংসাশী গাছের কথা জানবো, যাদেরকে বলা হয় পতঙ্গভুক উদ্ভিদ। এগুলো সাধারণত গুল্ম জাতীয়।

এটুকু আমরা সবাই আমরা জানি, গাছ সাধারণত সবুজ পাতায় সূর্যের আলোর সাহায্যে (সালোকসংশ্লেষণ) নিজের খাবার নিজেই তৈরি করে। কিন্তু এমন কিছু গাছ আছে, যাদের শুধু এভাবে পেট ভরে না! আমাদের যেমন শুধু ভাত বা রুটি খেলে চলে না, পুষ্টির জন্য বাড়তি আরও কিছু খেতে হয়। গাছেরও ক্ষেত্রেও তাই। গাছ সূর্যের আলোর সাহায্যে শর্করা তৈরি করে। শর্করা থেকে কার্বন, অক্সিজেন আর হাইড্রোজেন পাওয়া যায়। এ ছাড়াও গাছের বেঁচে থাকার জন্য দরকার হয় নাইট্রোজেন। সাধারণত গাছপালা শিকড়ের সাহায্যে মাটি থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে। কিন্তু এমন কিছু গাছ আছে যারা মাটি থেকে সরাসরি নাইট্রোজেন জোগাড় করতে পারে না, তখন তাদের বিকল্প উপায় বেছে নিতে হয়।

জীবজন্তু, পোকামাকড়ের দেহে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। গুল্ম জাতীয় এসব পতঙ্গভুকেরা এই পোকামাকড় খেয়ে তাদের নাইট্রোজেনের প্রয়োজন মেটায়। এসব ছোট ছোট গুল্ম তো আর বড় বড় জীবজন্তু খেতে পারে না। এরা খায় পুঁচকে পোকামাকড়। এসব গুল্মগুলো নিজেদের এমনভাবে বিবর্তিত করেছে যে, এরা পতঙ্গকে রীতিমতো ফাঁদে ফেলে কৌশলে আটকে ফেলে। একবার আটকে গেলে গাছ থেকে এক ধরনের হজমি রস বের হয়ে পোকার শরীর নরম করে দেয়। তখন তা থেকে গাছ দরকারি নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে।

পোকামাকড় শিকারের জন্য এসব গাছের রয়েছে নানা ধরনের ফাঁদ। ফাঁদে যখন পোকামাকড় ধরা পড়ে গাছেরা তখন সক্রিয় হয়ে ওঠে। পোকাখেকো গাছের ফুল হয় সুগন্ধিযুক্ত, পাতাগুলো হয় রঙিন আর উজ্জ্বল। মৌমাছি, প্রজাপতি, ফড়িং, পিঁপড়ে ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করে। তখন এদের অনেকেই এসব শিকারি গাছের ফাঁদে ধরা পড়ে।

বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ৬৩০ প্রজাতির পতঙ্গভুক উদ্ভিদ রয়েছে। এদের মধ্যে ইউটিকুলারিয়া অন্যতম বৃহত্তম গোত্র। এই গোত্রের প্রায় ২০০ প্রজাতি রয়েছে। এসব উদ্ভিদের গড়নও বেশ বিচিত্র। কারও ফাঁদ কলসের মতো, কারও ফাঁদ দাঁতযুক্ত চোয়ালের মতো, আবার কারও আছে মাথয় আঠালো রোম। তবে এদের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্যও আছে–এদের সবারই রং উজ্জ্বল আর মিষ্টি গন্ধযুক্ত।

কলসগাছ বা পিচার প্ল্যান্ট
এই গাছ দেখতে অনেকটা কলসের মতো। গাছটির বেশ কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে। এর নিচের দিকটায় থাকে আটকানো ফাঁপা নল, আর উপরের দিকটা খোলা। তবে এখানে ঢাকনার মতো একটি অংশ রয়েছে। দরকারমতো এটি খোলা এবং বন্ধ করা যায়। নলটির তলদেশে থাকে মিষ্টি মধু। এই মধুর খোঁজে কোনো পোকা ভেতরে প্রবেশ করলে কলসের উপরে ঢাকনার মতো অংশটি বন্ধ হয়ে যায় এবং ভেতরে পোকাটি আটকা পড়ে। সেটি হজম হলে নতুন শিকারের আশায় কলসের মুখ আবার খুলে যায়। বাংলাদেশে এই গাছের বেশ কয়েকটি প্রজাতি আছে।

সূর্যশিশির বা সানডিউ
এই প্রজাতির পতঙ্গভুক উদ্ভিদ ড্রসেরা নামেও পরিচিত। এদের কাণ্ড- শাখায় সরু সরু আঠালো রোম আছে। রোমের আগায় দেখতে শিশিরের মতো এক ধরনের আঠালো মিউসিলেজ থাকে। কোনো পোকা উড়ে এসে বসামাত্র এই আঠালো রোমে আটকা পড়ে। এ ধরনের গাছ তার শিকারকে খুব ধীরে ধীরে হজম করে।

ওয়াটারহুইল
ওয়াটারহুইল জলাভূমিতে জন্মায়। এদের সরু কাণ্ডের চারপাশে আটটি সুসজ্জিত স্বচ্ছ ছোট ছোট পাতা চাকতির মতো সাজানো থাকে। এজন্যই এদেরকে ওয়াটারহুইল বলে। এদের চাকতির মতো সাজানো থাকে। এজন্যই এদেরকে ওয়াটারহুইল বলে। এদের চাকতির মতো পাতাগুলোই আসলে ফাঁদ। এতে আটকা পড়ে প্লাংকটন নামে জলজ প্রাণী। ওয়াটারহুইলের পাতাগুলো দুই ভাগে বিভক্ত থাকে। কোনো পোকা অথবা জলজ প্লাংকটন বিভক্ত পাতায় এসে ঢুকলে পাতার দুটি অংশ মুহূর্তেই বন্ধ

লগইন করুন? লগইন করুন

বাকি অংশ পড়তে,

সাবস্ক্রাইব করুন

প্রারম্ভিক অফারটি


লেখাটি পড়তে
অথবা

সাবস্ক্রাইব করে থাকলে

লগইন করুন

You Might Also Like

03 Comments

Leave A Comment

Don’t worry ! Your email address will not be published. Required fields are marked (*).

Get Newsletter

Advertisement

Voting Poll (Checkbox)

Voting Poll (Radio)

Readers Opinion