প্রত্নতত্ত্ব
১
প্রাচীন ভারতে গ্যাল্ভ্যানিক ব্যাটারি ছিল কি না ও
অক্সিজেন বাষ্পের কী নাম ছিল
বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর সন্দেহ নাই, কিন্তু তাই বলিয়া যে একেবারেই এ সম্বন্ধে কোনো প্রমাণ সংগ্রহ করা যাইতে পারে না ইহা আমরা স্বীকার করি না। প্রাচীন ভারতে ইতিহাস ছিল না, এ কথা অশ্রদ্ধেয়। প্রকৃত কথা, আধুনিক ভারতে অনুসন্ধান ও গবেষণার নিতান্ত অভাব। বর্তমান প্রবন্ধ পাঠ করিলেই পাঠকেরা দেখিবেন, আমাদের অনুসন্ধানের ত্রুটি হয় নাই এবং তাহাতে যথেষ্ট ফললাভও হইয়াছে।
প্রাচীন ভারতে গ্যাল্ভ্যানিক ব্যাটারি ছিল কি না ও অক্সিজেন বাষ্পের কী নাম ছিল, তাহার মীমাংসা করিবার পূর্বে কীট্টকভট্ট ও পুণ্ড্রবর্ধন মিশ্রের জীবিতকাল নির্ধারণ করা বিশেষ আবশ্যক।
প্রথমত, কীট্টকভট্ট কোন্ রাজার রাজত্বকালে বাস করিতেন সেইটি নিঃসংশয়রূপে স্থির করা যাউক। এ সম্বন্ধে মতভেদ আছে। কেহ বলেন, তিনি পুরন্দরসেনের মন্ত্রী, অন্য মতে তিনি বিজয়পালের সভাপণ্ডিত ছিলেন। দেখিতে হইবে পুরন্দরসেন কয়জন ছিলেন এবং তাঁহাদের মধ্যে কে মিথিলায়, কে উৎকলে এবং কেই বা কাশ্মীরে রাজত্ব করিতেন। এবং তাঁহাদের মধ্যে কাহার রাজত্বকাল খৃস্ট-শতাব্দীর পাঁচ শত বৎসর পূর্বে, কাহার নয় শত বৎসর পরে এবং কাহারই-বা খৃস্ট-শতাব্দীর সমসাময়িক কালে। বোধনাচার্য তাঁহার রাজাবলী গ্রন্থে লিখিয়াছেন, পরম্পারম্প্রথিত-পথিকৌ (মধ্যে পুঁথির দুই পাতা পাওয়া যায় নাই) লসত্যসৌ। এই শ্লোকের অর্থ সম্বন্ধে পুরাতত্ত্বকোবিদ্ পণ্ডিতপ্রবর মধুসূদন শাস্ত্রীমহাশয়ের সহিত আমাদের মতের ঐক্য হইতেছে না।
কারণ, নৃপতিনির্ঘন্ট গ্রন্থে উতঙ্কসূরি লিখিতেছেন–নিগ..নন্দ..পরন্ত..ঞ্জং। ইহার মধ্যে যেটুকু অর্থ ছিল, তাহার অধিকাংশই কীটে নিঃশেষপূর্বক পরিপাক করিয়াছে। যতটুকু অবশিষ্ট আছে তাহা বোধনাচার্যের লেখনের কোনো সমর্থন করিতেছে না ইহা নিশ্চয়।
কিন্তু উভয়ের লেখার প্রামাণিকতা তুলনা করিতে গেলে, বোধনাচার্য ও উতঙ্কসূরির জন্মকালের পূর্বাপরতা স্থির করিতে হয়।
দেখা যাউক, চীন-পরিব্রাজক নিন্ফু বোধনাচার্য সম্বন্ধে কী বলেন। দুর্ভাগ্যক্রমে কিছুই বলেন না।
আমরা আরব-ভ্রমণকারী আল্করীম, পর্টুগীজ ভ্রমণকারী গঞ্জলিস ও গ্রীক দার্শনিক ম্যাক্ডীমসের সমস্ত গ্রন্থ অনুসন্ধান করিলাম। প্রথমত ইহাদের তিন জনের ভ্রমণকাল নির্ণয় করা ঐতিহাসিকের কর্তব্য। আমরাও তাহাতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু প্রবন্ধ-সংক্ষেপের উদ্দেশ্যে তৎপূর্বে বলা আবশ্যক যে, উক্ত তিন ভ্রমণকারীর কোনো রচনায় বোধনাচার্য অথবা উতঙ্কসূরির কোনো উল্লেখ নাই। নিন্ফুর গ্রন্থে হ্লাও-কো-নামক এক ব্যক্তির নির্দেশ আছে। পুরাতত্ত্ববিদ্মাত্রেই হলাও-কো নাম বোধনাচার্য নামের চৈনিক অপভ্রংশ বলিয়া স্পষ্টই বুঝিতে পারিবেন। কিন্তু হ্লাও-কো বোধনাচার্যও হইতে পারে, শম্বরদত্ত হইতেও আটক নাই।
অতএব পুরন্দরসেন একজন ছিলেন কি অনেক জন ছিলেন কি ছিলেন না, প্রথমত তাহার কোনো প্রমাণ নাই। দ্বিতীয়ত, উক্ত সংশয়াপন্ন পুরন্দরসেনের সহিত কীট্টকভট্ট অথবা পুণ্ড্রবর্ধন মিশ্রের কোনো যোগ ছিল কি না ছিল, তাহা নির্ণয় করা কাহারো সাধ্য নহে।
অতএব, উক্ত কীট্টকভট্ট ও পুণ্ড্রবর্ধন মিশ্রের রচিত মোহান্তক ও জ্ঞানাঞ্জন-নামক গ্রনেথ যদি গ্যাল্ভ্যানিক ব্যাটারি ও অক্সিজেন বাষ্পের কোনো উল্লেখ না পাওয়া যায়, তবে তাহা হইতে কী প্রমাণ হয় বলা শক্ত। শুদ্ধ এই পর্যন্ত বলা যায় যে, উক্ত পণ্ডিতদ্বয়ের সময়ে গ্যাল্ভ্যানিক ব্যাটারি ও অক্সিজেন আবিস্কৃত হয় নাই। কিন্তু সে সময়টা কী তাহা আমি অনুমান করিলে মধুসূদন শাস্ত্রীমহাশয় প্রতিবাদ করিবেন এবং তিনি অনুমান করিলে আমি প্রতিবাদ করিব, তাহাতে সন্দেহ নাই।
অতএব, কীট্টক ও পুণ্ড্রবর্ধনের নিকট এইখানে বিদায় লইতে হইল। তাঁহাদের সম্বন্ধে আলোচনা অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত হইল, এজন্য পাঠকদিগের নিকট ক্ষমা ভিক্ষা করি। কিন্তু তাঁহাদিগকে বিবেচনা করিয়া দেখিতে হইবে যে, প্রথমত নন্দ উপনন্দ আনন্দ ব্যোমপাল ক্ষেমপাল অনঙ্গপাল প্রভৃতি আঠারো জন নৃপতির কাল ও বংশাবলী-নির্ণয় সম্বন্ধে মধুসূদন শাস্ত্রীর মত খন্ডন করিয়া সোমদেব চৌলুকভট্ট শঙ্কর কৃপানন্দ উপমন্যু প্রভৃতি পণ্ডিতের জীবিতকাল নির্ধারণ করিতে হইবে ; তাহার পর তাঁহাদের রচিত বোধপ্রদীপ আনন্দসরিৎ মুগ্ধচৈতন্যলহরী প্রভৃতি পঞ্চান্নখানি গ্রন্থের জীর্ণাবশেষ আলোচনা করিয়া দেখাইব, উহাদের মধ্যে কোনো গ্রন্থেই গ্যাল্ভ্যানিক ব্যাটারি অথবা অক্সিজেনের নামগন্ধ নাই।
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment