বহির্বিশ্ব ও ‘মানুষের পৃথিবী’
যেদিন মহাকাশ যুগের শুরু হয়েছে, বিশেষতঃ যেদিন মানুষ মহাশূন্যে পদচারণা করেছে, সেদিন থেকেই আমরা যে-পৃথিবীতে বাস করি সেই পৃথিবী সম্পর্কে 'আমাদের ধ্যান-ধারণা চূড়ান্তভাবে বদলে গেছে। ইতিহাসে এই সর্বপ্রথম, মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ উভয় অর্থেই পৃথিবী এবং বিশ্বের ঘটনাবলী সম্পর্কে একটা ব্যাপক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের অবস্থায় পৌঁছেছে ৷
এই ধরণের দৃষ্টিভঙ্গি মানুষের জীবন, পৃথিবী সম্পর্কে তাদের জ্ঞান এবং তাদের নিজেদের সম্পর্কেও অনেক কিছুই প্রকাশ করে। নিজস্ব বিমান থেকে পৃথিবী পর্যবেক্ষণ করে বৈমানিক ও মানবতাবাদী লেখক আঁতোয়া দ্য সেন্ট এক্সিউপারী পৃথিবী সম্পর্কে বলেন যে, “মানুষের পৃথিবী” এই গ্রহের বাসিন্দাদের পরস্পর নির্ভরশীলতার ফল হিসেবে উদ্ভুত। গ্রহের ওপরে এবং সঙ্গীসাথীদের ওপরে মানুষের এই নির্ভরশীলতা, বহির্বিশ্বের প্রাণহীন ব্যাপ্তি থেকে পৃথিবীকে দেখা মহাকাশচারীর কাছে আরো তীব্রভাবে অনুভূত হয়। মহাকাশ পরিক্রমায় অত্যধিক উচ্চতা থেকে গ্রহের আরো অনেক বেশি আগ্রহোদ্দীপক দৃশ্য নজরে পড়ে যা মানবজাতির কাছে এ ঘটনার তাৎপর্য সম্পর্কে আমাদের এক নতুন উপলব্ধি এনে দেয়।
গ্রহের সর্বব্যাপী দৃশ্য গ্রহের ওপর মানুষের নির্ভরশীলতাকে, মানুষের অনন্য জীবনধারণ পরিস্থিতির সামগ্রিকতা, যা নাকি তাকে রক্ষা করতে এবং বজায় রাখতেই হবে, সেই হিসেবে এবং পৃথিবীর মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতা বিষয়ে মানুষকে আরো তীব্রভাবে অনুভব ও উপলব্ধি করতে সক্ষম করে তোলে। এমনকি মহাকাশের আয়তন সম্পর্কে কিছু কিছু ধারণা করতে পারলেও মানুষ নিজেকে পৃথিবী নামধেয় এক বিরাট স্থানের বাসিন্দা হিসেবে গণ্য করে চলেছে। তবু বিশ্বের প্রকৃত আকার কিংবা পৃথিবী ও বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অনুপাত সম্বন্ধে তার সুস্পষ্ট কোনো ধারণা নেই ৷ মহাকাশচারী পথিকৃৎ ইউরি গাগারিন বহির্বিশ্ব থেকে এই গ্রহ পর্যবেক্ষণ করার আগে পর্যন্তও আমাদের কাছে এটা প্রতীয়মান হয় নি যে আমাদের পৃথিবী, মহাকাশের কৃষ্ণবর্ণ নিষ্প্রাণ মহাসাগরের তুলনায় কতই না ক্ষুদ্র—একবিন্দু বালুকণার চেয়েও তা বড় নয়। মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে পৃথিবীর চারদিকে পরিক্রমা করা যায়, মুহূর্তেই হয়তো মুঠোয় আসে ইউরোপ, এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকা, মহাকাশচারী হিসেবে মহাকাশ যাত্রা আমার মধ্যে অন্যতম যে জোরালো আবেগ সঞ্চার করেছে, তা হচ্ছে, আমাদের পৃথিবীর গণ্ডীটা কত ক্ষুদ্র, সেই উপলব্ধি।
পৃথিবীকেই একটা মহাকাশযানের সাথে তুলনা করা যায়। চারশো কোটি নাবিক নিয়ে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মধ্যে তা ভেসে চলেছে। পৃথিবীর ওপরে আর তার বাসিন্দারা কী পরিমাণে বিচারবুদ্ধি ও দুরদৃষ্টিসম্পন্ন তারই ওপরে নির্ভর করে এই নাবিকবাহিনীর জীবন ও নিরাপত্তা। পারমাণবিক যুদ্ধের বিপদ চিরতরে দূরীভূত না হোলে, উত্তেজনা প্রশমনকে অলঙ্ঘনীয় করতে না পারলে এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতার ব্যয় থেকে মানবজাতিকে মুক্তি দিতে না পারলে মানুষের আবাসভূমি রক্ষা করা যাবে না। এই সব ধারণার প্রভাব ও মর্যাদা বাড়ানোর কাজে মহাকাশচারী এক গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক অভীষ্ট সাধন করছে। মহাকাশ গবেষণার সাফল্য সদাসর্বদাই শাস্তি ও সমাজপ্রগতির ধ্যানধারণার সাথে গ্রথিত ৷ ইউরি গাগারিনের মতই আমরা সোভিয়েত মহাকাশ বিজ্ঞানীরা মহাকাশ গবেষণা এবং বৈপ্লবিক পরিবর্তন ও সাম্যবাদী সমাজগঠনের প্রক্রিয়া যা নাকি মানব-জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করছে, তার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংযোগ দেখতে পাই। মহাকাশ বিজ্ঞান মহাকাশ ও পৃথিবী উভয়ক্ষেত্রেই বর্তমানে শান্তি ও সমাজতন্ত্রের স্বার্থ ঘনিষ্ঠভাবে তুলে ধরছে, দেশে দেশে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং শান্তির সঞ্চার করছে।
গ্রহের সামগ্রিক ছবি গ্রহ-গবেষণার ক্ষেত্রে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে; পৃথিবীকে জানার জন্যে কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাকাশযান অত্যন্ত মূল্যবান সামগ্ৰী হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্পপ্রধান সভ্যতা বিশ্বচরিত্র অর্জন করায় এবং তার ফলে উদ্ভূত বহুসংখ্যক সমস্যা, যা সমাধানের ওপরে অধিকতর বিকাশ ও মানবজাতির অস্তিত্ব পর্যন্ত নির্ভর করে, সেই কারণেই এটা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বহির্বিশ্ব থেকে কাজ চালিয়ে আবহমণ্ডল, মহাসাগর, নদীনালা দূষিতকরণ প্রক্রিয়ার মত নেতিবাচক প্রক্রিয়া সমেত বিবর্তনের বিবিধ প্রক্রিয়া গবেষণা করা যেতে পারে। তা এই সব
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment