যানজটের হাত থেকে মুক্তি মিলবে কি?
ঢাকার রাস্তায় প্রতিদিন মানুষের যে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়, তার প্রকৃত অবস্থা কেবলমাত্র ভুক্তভোগীদের পক্ষেই অনুভব করা সম্ভব। যানজটের কারণে প্রতিদিন যে শুধু ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট [যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে ৩৭ হাজার কোটি টাকা, যা জাতীয় বাজেটের ১১ ভাগের একভাগ] হচ্ছে তাই নয়, এর সরাসরি প্রভাব রয়েছে পরিবেশ দূষণ, শব্দ দূষণ, সড়ক দুর্ঘটনা ও চলাচলকারী ব্যক্তির মানসিকতার উপর [মেজাজ খিটখিটে হওয়া, ক্লান্তি, বিরক্তি, কাজের গতি কমে যাওয়া, আয়ুষ্কাল কমে যাওয়া]। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই অসহনীয় যানজটের হাত থেকে আমাদের সাধারণ মানুষের মুক্তি মিলবে কি? সত্যি বলতে এই বিষয় নিয়ে এত বেশি আলোচনা হয়েছে এবং হচ্ছে, তাই আমি উত্তরটি দেয়ার জন্য বিশদ বিবরণের আশ্রয় না নিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ের উপর আলোকপাত করতে চাই।
বর্তমানে শুধু ঢাকা শহরেই রয়েছে ৮টি ফ্লাইওভার [আরো বেশকিছু প্রক্রিয়াধীন]। জনমনে এমন ধারণা বদ্ধমূল, ফ্লাইওভার করলেই যানজট কমবে। কিন্তু গবেষণা বলছে ভিন্ন কথা। সম্প্রতি ঢাকা শহরের ফ্লাইওভারগুলোর ওপর বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হকের অধীনে দুটি পৃথক গবেষণা করেন, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রাকিবুল ইসলাম এবং আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের প্রভাষক নাফিস আনোয়ারী। দুটি গবেষণাতেই উঠে এসেছে, কোনো ফ্লাইওভারই ঠিকমতো কাজ করছে না। গবেষণায় বলা হয়েছে, ফ্লাইওভারের ধারণা শহরের জন্য নয়। ফ্লাইওভার করতে হবে, বড় শহরগুলোর সংযোগকারী রাস্তার মিলিত স্থানে যেখানে দিক পরিবর্তন করে গাড়ি ভিন্ন ভিন্ন শহরে যায়। শহরের প্রাণকেন্দ্রে যানজট নিরসনে অল্প সময়ে অধিক যাত্রী পরিবহনে সক্ষম এমন পরিবহন ব্যবস্থা [এমআরটি, বিআরটি] ও রেলপথ-সড়কপথ-জলপথ-বিমানপথের সমন্বিত সংযোগ ব্যবস্থার (ইন্টারমোডাল ট্রান্সপোর্টেশন] উপর গুরুত্ব দেন তারা। পাশাপাশি শহরের মধ্যে আর কোনো ফ্লাইওভার না করার ব্যপারে জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করেন।
আমাদের দেশে উপর্যুক্ত সুবিধাসম্পন্ন ও পর্যাপ্ত গণপরিবহনের অভাব, নিরাপত্তাজনিত সমস্যা, সিটিং সার্ভিসের নামে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, নারী-শিশু-বৃদ্ধ- প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা না থাকা, চলন্ত বাসে ওঠানামা করতে বাধ্য করা, সামাজিক মর্যাদাসহ নানা কারণে মানুষ সুযোগ পেলেই ব্যক্তিগত গাড়ির দিকে ঝোঁকে। কিন্তু বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কম খরচে ও অল্প জায়গায় বেশি যাত্রী পরিবহন, সড়ক দুর্ঘটনা কমানো, জ্বালানি অপচয় রোধ, পরিবেশ দূষণ কমানো, সামাজিকীকরণসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ব্যক্তিগত গাড়ির তুলনায় গণপরিবহন অনেক বেশি কার্যকর। এজন্য আমাদের গণপরিবহনের উপর গুরুত্বারোপ করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষ গণপরিবহন ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হয়। গণপরিবহনের জন্য আলাদা লেন [যেখানে শুধু গণপরিবহন চলাচল করবে], নির্দিষ্ট স্টপেজ, ভাড়া ও সুনির্দিষ্ট টাইমিং থাকবে, এবং সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি পুরো শহরকে বাস চলাচলের জন্য চার থেকে পাঁচটি রুটে ভাগ করে প্রতিটি রুটের জন্য একটি করে বাস কোম্পানি গঠন করা যেতে পারে, বর্তমানে যারা মালিক আছেন, তারাই এসব কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার হবেন। এরপর আনুপাতিক হারে মালিকদের মধ্যে মুনাফা বণ্টন করা যেতে পারে। বাস চালকদের জন্য মাসিক নির্দিষ্ট আয়ের ব্যবস্থা থাকবে। তখন চালকের মধ্যে বেপরোয়া ভাব আসবে না। তখন সড়কের শৃঙ্খলা কিছুটা সম্ভব হবে। এর সাথে আরেকটি জিনিস যুক্ত করতে চাই, অযান্ত্রিক যানবাহন [নন মোটোরাইজড ভেইকেল] অবশ্য-অবশ্যই ঢাকার রাস্তা থেকে বন্ধ করতে হবে, কিন্তু তার আগে এইসব বাহন যেসব সড়কে জনসাধারণকে সেবা দিচ্ছে, ঐখানে গণপরিবহনের সেবা আগে নিশ্চিত করতে হবে। হঠাৎ করে লেগুনা বা অযান্ত্রিক যানবাহন রিকশা বন্ধ করে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যাবে না।
ঢাকা শহরের জন্য আফসোসের বিষয়, এর চারদিকে নদী থাকলেও আজ পর্যন্ত ঢাকার মধ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাচলের জন্য সেই অর্থে কোনো
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment