- সোমেন চন্দ
- 26 Nov 2024
- 100
- 02
রাজপুত্তুরের গল্প
রাজপুত্তুরের নাম ইন্দ্রনাথ। বড়ো একটা দেশ একেবারে কম আয়াসে জয় করে নিলে! অত অত সৈন্য নেই, তেমন হাতি নেই, ঘোড়া নেই, তেমন কামান বন্দুক নেই তবু জয় করে নিলে। তারপর তার খুশি দেখে কে? এমন হলে কে না খুশি হয়? রাজ্য পেয়েই তো ইন্দ্রনাথ রাজা হল। এবার শাসনের পালা। অত বড়ো দেশ সে কেমন করে শাসন করবে? কিন্তু ইন্দ্রনাথ ঘাবড়াল না। খুব বুদ্ধিমান কিনা! শাসনকাজে আগে যেসব বড়ো বড়ো কর্মচারী ছিল তারা ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু এইজন্য তাদের একেবারে পথে বসানো হল না। ছেলে বা অন্য কোনো ঘনিষ্ঠ আত্মীয়কে সেইসব পদে নিযুক্ত করা হল। কাজেই তারা অধীন থেকেও খুশি হয়ে গেল। আর যারা বিদ্রোহ করেছিল, সংখ্যায় তারা অল্প, তাদের কেউ করলে আত্মহত্যা, কেউ পালিয়ে গেল দেশ থেকে। কিন্তু কী ক্ষমা! তাদের খালি তক্তপোশে তাদের আত্মীয়স্বজনদেরই বসানো হল, লোকচক্ষে নিজে বেদখল না করে—আসলে কিন্তু রাজ্যশাসন করবে নিজেই, অথচ জনসাধারণ ভাবল, কী ভালো আমাদের নতুন রাজা! দেখ, ওদের কোনো শাস্তি পর্যন্ত দিলে না!
রাজকুমার ইন্দ্রনাথের বুদ্ধি আছে। এইভাবে রাজ্য জয়ের ব্যাপারে যেসব বিশৃঙ্খলা জেগে উঠেছিল, সেসব সহজেই থামানো গেল। ইন্দ্রনাথের নিজের দেশ যেখানে ছিল—এই নতুন রাজ্যের কাছেই, নইলে আর অত সহজে জয় করা যাবে না কেন, সেই দেশের রীতিনীতি আইনকানুন, শাসনের অবস্থা সব ভালো করে জেনেই সে এসেছিল—নিজের যে দেশ, সেখানে লোক ভয়ানক গরিব, সেখানে তেমনি পাঁচজন লোক খেতে পায় তো পঞ্চাশ জন না খেয়ে থাকে, সেখান থেকে লোক আনিয়ে ইন্দ্রনাথ তাদের ভালো ভালো চাকরি—যেসব চাকরিতে দায়িত্ব আর সিন্দুক খোলার চাবি,—দিলে। এতে এক বিষয়ে নিশ্চিন্ত হওয়া গেল; লোকগুলো তো নিজের দেশের আর হাতের; ভুলেও কখনও বিদ্রোহ করবে না, বরং এদের জোরে পরের রাজ্যে নিজের পক্ষটা শক্তিশালী হল। এদিকে ছোটো ছোটো আর মাঝারি গোছের সমস্ত চাকরি, যেগুলিতে নেই দায়িত্ব আর চাবি, সেগুলো দেওয়া হল এই দেশের লোকদের—রীতিমতো মাইনে আর বুড়ো হলে চাকরি ছাড়বার সময় অনেকগুলো টাকা একসঙ্গে পাওয়া যায়, যা আগে ছিল না। এই পেয়ে সকলে খুশি।
এইভাবে চলছে তো চলছেই, অনেকগুলো বছর গেল কেটে। ইন্দ্রনাথ শাসনের সুবিধার জন্য সারা দেশটা কতকগুলো ভাগে ভাগ করে নিলে—এখানকার লোক বুঝলে, এই,—আর মনে করল, তারা ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশের ভিন্ন ভিন্ন লোক। আসলে একই দেশে বাস করল, কারণ মহারাজ ইন্দ্রনাথই যে রয়েছে সকলের উপরে, মূল ক্ষমতার অধিকারী সে-ই। কিন্তু দু-একজন যারা চিন্তাশীল তারা ভাবল, এসব বাইরের চটক, দোকানদারের গ্রাহক আকর্ষণ করবার মতো একটা উপায়। তারা প্রতিবাদ জানাল। ইন্দ্রনাথ মনে মনে ঘাবড়ে গেল, এতকাল নিশ্চিন্তে রাজত্ব করে, পরেরটা দিয়ে নিজের দেশের আর ব্যক্তিগত সমৃদ্ধি বাড়িয়ে, অথচ বুদ্ধি খাটিয়ে এদেশের অত অত অনুভূতি ছাড়া লোকদের খুশি রেখে, বা খুশি না রেখেও প্রতিবাদ করবার মুখ কৌশলে ভেঙ্গে অমন আরামের সন্ধান পেয়ে এতকাল ভাবতেও পারেনি যে তার ভিতরের কৌশলও অনেকে ধরে ফেলেছে, সে মনে মনে ভয়ানক ঘাবড়িয়ে গেল। কিন্তু বাইরে তা প্রকাশ করল না। রাজ্য পাবার পর এতকাল সে এ দেশেরই লোক দিয়ে অনেক সৈন্য তৈরি করেছে, ভাবতে পারা যায় না সে কত সৈন্য! আর তৈরি করিয়েছে কত দুর্গ, অস্ত্রশস্ত্র, জোগাড় করেছে কত ঘোড়া, হাতি,—নিযুক্ত করেছে এ দেশেরই লোক দিয়ে কতকগুলি চর। তাই সে প্রথমে কিছু গ্রাহ্যই করলে না, কিন্তু কানের কাছে সবসময়ে একটা জিনিস বাজলে তার তো প্রতিকার করতে হয়। তাই ইন্দ্রনাথ ডেকে পাঠাল তাদের, ওই কটি লোককে যদিও অনায়াসে পারত, তবুও কামান দিয়ে দিলে না উড়িয়ে, নিজের আত্মসম্মান একটু
লগইন করুন? লগইন করুন

সোমেন চন্দ
সোমেন চন্দ, ১৯২০ সালের ২৪ মে সোমেন চন্দ নরসিংদী জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৩৬ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর তিনি ঢাকা মিটফোর্ড মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন, কিন্তু খারাপ স্বাস্থ্যের কারণে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় নি। তারপর তিনি "প্রগতি লেখক সংঘে" যোগদান করেন এবং মার্ক্সবাদী রাজনীতি ও সাহিত্য আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন। তিনিই বাংলা সাহিত্যে প্রথম গণসাহিত্যের উপর কাজ করেন। ১৯৪১ সালে সোমেন চন্দ প্রগতি লেখক সংঘের সম্পাদক নির্বাচিত হন। মাত্র ১৭ বছর বয়েসে উপন্যাস 'বন্যা' লিখেছেন। ১৯৪০ সালে তার "বনস্পতি" গল্পটি "ক্রান্তি" পত্রিকায় ছাপা হয়। ১৯৭৩ সালে রণেশ দাশগুপ্ত তাঁর গল্পসমূহের একটি সঙ্কলন সম্পাদনা করেন। তাঁর লেখা "ইঁদুর" গল্পটি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়। সোমেন চন্দ পুরস্কারের প্রবর্তন করে কলকাতা বাংলা একাডেমী। ১৯৪২ সালের ৮ই মার্চ তিনি আততায়ীর হামলায় নিহত হন। তিনিই বাংলার ফ্যাসীবাদী বিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহীদ।
-
১
শ্রমজীবীরা বিশ্বের দেশে দেশে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেছে অথবা আজ হোক কাল হোক করবে। সমস্ত মৌল অর্থনৈতিক সম্পদে ব্যক্তিগত মালিকানার উচ্ছেদ ঘটিয়ে সামাজিক মালিকানাজারী প্রথম কাজ। শিল্পকলা সাহিত্যেরও দখল নেয়া এই কাজের অন্তর্ভুক্ত। এই একান্ত বাস্তব ও অনিবার্যভাবে সম্ভাব্য বাস্তব থেকে উদ্ভব হয়েছে সাহিত্য শিল্পকলার নতুন সংজ্ঞা সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতাবাদের। এই
-
রবীন্দ্রনাথের জন্ম কলকাতায় জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে। বাংলার সাহিত্য, শিল্প, সংস্কৃতি ও স্বাদেশিকচেতনা উন্মেষে যে পরিবার বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। রবীন্দ্রনাথের (১৮৬১-১৯৪১) বয়স যখন পাঁচ বছর, ১৮৬৬ সালে ঠাকুর পরিবারের সুহৃদ, রবীন্দ্রনাথের গৃহশিক্ষক রাজনারায়ণ বসু (১৮২৬-১৮৯৯) কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘জাতীয় গৌরবেচ্ছা সভা’ এবং ‘হিন্দুমেলা’ (১৮৬৭)। পরবর্তী সময় থেকে এ মেলার নামকরণ করা
Leave A Comment
Stay Connected
Get Newsletter
Subscribe to our newsletter to get latest news, popular news and exclusive updates.
Featured News
-
Long established fact that a reader will be distracted
- by Ninurta
- 16 April 2017
-
Long established fact that a reader will be distracted
- by Ninurta
- 16 April 2017
-
Long established fact that a reader will be distracted
- by Ninurta
- 16 April 2017
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment