সোভিয়েত ইউনিয়নের কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের দিন থেকে এই বিশ বছরে মহাকাশ-বিজ্ঞান মানুষের কল্যাণে মহাকাশকে বাস্তব কাজে ব্যবহারের দিকে এগিয়েছে। মহাকাশযুগের যে তৃতীয় দশক সবে শুরু হয়েছে তাতে এই ঝোঁক বাড়বে। বর্তমানে মহাকাশকে, শুধুমাত্র গবেষণার বস্তু হিসেবেই দেখা হয় না। মহাকাশকে দেখা হয় এক অনন্য প্রয়োগ বিদ্যাবিষয়ক পরিমণ্ডল হিসেবে, আমাদের গ্রহ ও তার সম্পদের অনুসন্ধান এবং অধিক থেকে অধিকতর কর্মক্ষম প্রয়োগবিষয়ক পদ্ধতির রূপকরণের সেতুফলক হিসেবে দেখা হয় মহাকাশকে।

সমস্ত দেশ এবং জাতির পক্ষেই বহিবিশ্ব প্রয়োজনীয়, কিন্তু সরাই-ই অর্থ- নৈতিক দিক থেকে মহাকাশ অভিযানে যথেষ্ট পরিমাণে শক্তিশালী নয়-তাদের শক্তি এ থেকে অনেক কম। সি. এম. ই. এ-র ছোট ছোট দেশগুলোর কোনোটাই নিজস্ব চেষ্টায় মহাকাশ অভিযান পরিচালনায় সক্ষম নয়। এই কারণেই আন্তঃ বিশ্বপরিমণ্ডল কর্মসূচীকে সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। এই কর্মসূচী সিএমইএ কাঠামোর মধ্যে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর প্রয়াস ঐক্যবদ্ধ করেছে। উন্নয়নশীল বৈজ্ঞানিক ও অর্থনৈতিক অখণ্ডতা সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর এক বৃহৎ গোষ্ঠীকে মহাকাশ শক্তি শ্রেণর অন্তর্ভুক্ত করেছে। সোভিয়েত ইউনিয়নকে ধন্যবাদ এই জন্য যে, সোভিয়েত ইউনিয়ন মহাকাশবন্দর, রকেট, উড্ডয়নের হদিশ রাখার জন্য এবং কক্ষ থেকে আসা তথ্যের সত্বর বিন্যাসকরণের জন্য পার্থিব স্টেশন আবহমণ্ডল ও সংবাদ আদান-প্রদান সংক্রান্ত কৃত্রিম উপগ্রহ এবং আন্তঃ বিশ্ব- পরিমণ্ডল কর্মসূচীর আওতায় যৌথ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য লভ্য মনুষ্যবাহী অথবা মনুষ্যহীন মহাকাশযান তৈরি করেছে। মহাকাশ পরিক্রমাবিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে মূলগতভাবে যে সমস্ত নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে, সমাজ তান্ত্রিক দেশগুলে। তা সদ্ব্যবহার করার অবস্থায় এসেছে।

আন্তঃ বিশ্বপরিমণ্ডল কর্মসূচী হচ্ছে এক স্থায়ী দূরপ্রসারী কর্মসূচী। এই কর্মসূচী যেহেতু সকলের কল্যাণসাধন করে সেহেতু এই কর্মসূচীর দ্রুত বিকাশ ঘটে চলবে। আন্তর্জাতিক শ্রমবিভাজন এবং প্রত্যেক অংশীদারের সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী সম্পদের প্রয়োগ মহাকাশ কর্মসূচীকে উন্নত করতে এবং সম্পদ ও বৈজ্ঞানিক ক্ষমতার বিচক্ষণ প্রয়োগে আমাদের সক্ষম করে তুলবে।

মহাকাশে সহযোগিতা সংশ্লিষ্ট দেশগুলির পক্ষে অর্থনৈতিক দিক থেকে লাভ- জনক। উদাহরণস্বরূপ সোয়ুজ ২২-এর মহাকাশচারীরা। সোভিয়েত বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় জি. ডি. আর-এ ফার্ন' হাইম জেনা নামে জনগণের শিল্পসংস্থায় নির্মিত বহুমণ্ডলবিশিষ্ট একটি ক্যামেরাতে ভূ-পৃষ্ঠের ছবি তোলেন। পরীক্ষা থেকে দেখা গেছে প্রস্তাবিত নতুন কৃৎকৌশলগত সমাধানগুলি নির্ভুল। গৃহীত ছবিগুলি অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, এই ধরনের ফটোগ্রাফিক পদ্ধতি, বনাঞ্চলের অবস্থা নিয়মিত পরিদর্শন সংগঠিত করা, সময় থাকতে কোন অঞ্চলে দ্রুত মড়ক ছড়িয়ে পড়ছে তা বের করা, ফসলের উন্নয়ন সম্পর্কে অনুসন্ধান করা, ভবিষ্যৎ ফসল ও গোচারণ-ভূমির খাদ্যভাণ্ডারের হিসেব করা, জলজ উদ্ভিদ গুল্মে সমৃদ্ধ এবং তারই ফলস্বরূপ মৎস্য সমৃদ্ধ বিশ্বমহাসাগরীয় অঞ্চলগুলির হদিশ নেওয়া এবং বায়ু দূষিতকরণ নিরোধ করা, এই সব বিষয় সম্ভব করে তোলে।

মহাকাশবিজ্ঞানের আশু সুবিধাগুলিই শুধু অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ নয়। পৃথিবীতে পরম্পরাগত অর্থনৈতিক ক্ষেত্রগুলিতে মহাকাশ গবেষণার সাফল্যগুলিকে প্রয়োগ করার মতো পরোক্ষ লাভও আছে। আন্তঃ বিশ্বপরিমণ্ডল সিরিজে সর্বপ্রথম উপগ্রহ দিয়ে যে সূচনা, তারই সাথে মহাকাশকে ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রপাতির জি. ডি. আর বিজ্ঞান একাডেমির ইলেকট্রনিক্‌স্ ইনস্টিটিউট তৈরি করে চলেছে। আমরা যে ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি তার অনেকাংশই অর্থনৈতিক দিক থেকে প্রয়োজনীয় এবং আমরা এ বিষয়ে সুনিশ্চিত যে আমাদের যে সাফল্যগুলি প্রয়োগ করা যায় সে বিষয়ে বিভিন্ন শিল্প ওয়াকিবহাল। এটা তিনটি খাতে প্রবাহিত হচ্ছে। একটি হচ্ছে, উন্নতমানের শিল্পে প্রয়োগে, আর্দ্রতা, তাপমাত্রা এবং চাপের নিবিড় ও নির্ভরশীল পরীক্ষার প্রয়োগে। আর একটি হচ্ছে, উপগ্রহে ব্যবহারের জন্যে অনুসৃত বার্তা ও সংকেত বহন সংক্রান্ত পদ্ধতির প্রয়োগে। এই পদ্ধতি পার্থিব পরিস্থিতিতে প্রযুক্তিবিষয়ক প্রক্রিয়াগুলি অনুসরণে এবং সুবিধাজনকভাবে অসংখ্য বিষয়ের দ্রুত তথ্য সংগ্রহ সম্ভব করে তোলে। তৃতীয় ধারাটি হচ্ছে মহাকাশযানে স্মরণ উপাদানের প্রয়োগ।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ কর্মসূচী থেকে আন্তঃ বিশ্বপরিমণ্ডল কর্মসূচীর তফাতটা

লগইন করুন? লগইন করুন

বাকি অংশ পড়তে,

সাবস্ক্রাইব করুন

প্রারম্ভিক অফারটি


লেখাটি পড়তে
অথবা

সাবস্ক্রাইব করে থাকলে

লগইন করুন

You Might Also Like

03 Comments

Leave A Comment

Don’t worry ! Your email address will not be published. Required fields are marked (*).

Get Newsletter

Advertisement

Voting Poll (Checkbox)

Voting Poll (Radio)

Readers Opinion