গাজাযুদ্ধের এক বছর : শেষ কোথায়?
৭ অক্টোবর ২০২৩ : ফিরে দেখা
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গত বছর ৭ অক্টোবর ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। হামলায় তারা সীমানা পেরিয়ে স্থল অভিযানের পাশাপাশি সমুদ্র দিয়ে ও আকাশপথে হালকা উড়োযান ব্যবহার করে। হামলায় ১২০০ জন নিহত হয়, যার বেশিরভাগই ছিল বেসামরিক নাগরিক। এছাড়াও ২৫১ জনকে জিম্মি করে। ঘটনাটি এতই আকস্মিক ও পরিকল্পিত ছিল যে ইসরাইলি গোয়েন্দারা বিষয়টি সম্পর্কে আঁচ করতে পারেনি। এরপর ইসরায়েল প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘ভয়ংকর প্রতিশোধ’ নেওয়ার কথা বলে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ‘অপারেশন আয়রন সোর্ড’ নামে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরাইল। এখানেও ইসরাইলি হামলায় হত্যাযজ্ঞের শিকার হচ্ছে অসংখ্য ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ২০২১ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষে গাজা ও আল-আকসা মসজিদে প্রায় ২৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়া, জেনিনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযান এবং ২০২৩ সালে ফিলিস্তিনি এলাকায় ইসরায়েলের বসতি স্থাপন বৃদ্ধি ও ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা—এই ঘটনাগুলোকে ইসরাইলে আক্রমণের ন্যায্যতা হিসেবে দাবি করেছে হামাস।
মৃত্যুপুরী গাজা
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় ৪১,৮৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯৬,৯১০ জন। তবে অনেক গবেষকের মতে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। বোমা হামলায় গুরুতর আহত হয়ে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হারিয়েছেন যারা, পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে বা মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন কেউই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছে না। জাতিসংঘের Coordination of Humanitarian Affairs-এর মতে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ নাগাদ গাজার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে ১৭টি আংশিক কার্যকর আছে। ১৩২টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৭টি কোনো রকমে কাজ করছে। প্রয়োজনীয় জ্বালানি আর ওষুধের অভাবে স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুরোই ভেঙে পড়েছে।
যে ১৮ লাখ মানুষ স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছেন তাদের ত্রাণের ট্রাক থেকে পাওয়া পুরনো কাপড় দিয়ে তৈরি তাঁবুতে বাস করতে হচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম উপকরণ থেকেও তারা বঞ্চিত। খাবার, পানি, ওষুধের অভাবের সঙ্গে রয়েছে সার্বক্ষণিক বোমা হামলার আতঙ্ক।
নরোয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী গাজার তথাকথিত ‘নিরাপদ’ এলাকায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৩০,০০০ মানুষের বসবাস। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু বিষয়ক দপ্তরের মতে এই অমানবিক পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে নারী ও শিশুরা। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার মতে উদ্বাস্তুদের মধ্যে ৪৩,৫৮০ জন নারী গর্ভবতী। ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী অন্তত ২,৪০,০০০ শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। ৫০,০০০ এর বেশি শিশু-কিশোর মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।
গাজার উদ্বাস্তুদের কাছে জীবনের কোনো অর্থ নেই। গাজার বাসিন্দা শরিফ আতাল্লাহের ভাষায়, ‘পানি, খাদ্য, বেঁচে থাকার জন্য মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আর কোনো প্রকার আয়-রোজগার ছাড়া জীবন, শূন্যতায় এসে ঠেকেছে।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘সমগ্র পৃথিবী গাজার মানুষদের বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছে। …এখন তাদের জীবনে একটাই নিশ্চয়তা আছে আর তা হলো—আগামীকাল আরও ভয়াবহ।’
যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা
বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক আর সামরিক সহায়তায় চলে আসা ইসরায়েলি আগ্রাসন আর যুদ্ধের প্রতিপক্ষগুলোর আপোসহীন মনোভাবের কারণেই গাজা আর লেবাননে যুদ্ধবিরতির কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
ইসরায়েলের বার-ইলান বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগিন-সাদাত সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এইতান শামিরের মতে মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। বর্তমানে শুধু ইরান এই যুদ্ধে সরাসরি অংশ নেয়নি। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, ইসরায়েল ইরানে আঘাত হানবে কবে বা কখন?
মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান ভীতিকর পরিস্থিতির জন্য অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রকে সমানভাবেই দায়ী করছেন। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পলিটিকো র এক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যদিও যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ইসরায়েলের প্রতি যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানিয়ে আসছে, কিন্তু হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা গোপনে তাদের সামরিক সহায়তা দিচ্ছে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে নেওয়ার জন্য। যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে গাজা ও লেবাননের যুদ্ধে নিজেকে মধ্যস্থতাকারী
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment