পেনিসিলিনের গোড়ার কথা
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের দৌলতে পেনিসিলিনের নাম আজ আর কারও অজানা নেই। দু'এক বছরের মধ্যেই খবরের কাগজের পাতায় পাতায় এ খবর সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে অথচ পেনিসিলিন নেহাৎ নূতন নয়। কতকটা অভাবনীয় ও নাটকীয়ভাবে পেনিসিলিনের অস্তিত্ব ও রোগনিবারণী ক্ষমতা ধরা পড়ার জন্যই বোধ হয় এটি এত অল্পকালের মধ্যেই বহুজনপরিচিত ও বহুপ্রচলিত হয়েছে।
১৮৭৭ সালে লুই পাস্তুর লক্ষ্য করেন পরখনলের মধ্যে একজাতের ব্যাধিজীবদের (ব্যাক্টিরিয়া) বৃদ্ধি অন্য আর একজাতের ব্যাধিজীবদের সংস্পর্শে ও সমকালীন বৃদ্ধির ছোঁয়াচে থেমে যায়। এর কারণ এখন অজানা নেই। ব্যাধিজীবরা হ'ল অনুদেহী অনুজীব- (মাইক্রো-অরগ্যানিজম্)। তাদের প্রাণক্রিয়ার ফলে নানা জাতের সুনির্দিষ্ট রাসায়নিক পদার্থ তৈরী হয়। এক জাতের ব্যাধিজীবদের বৃদ্ধি-বিরোধী (গ্রোথ, ইনহিবিটিং) অন্য জাতের ব্যাধিজীবদের ক্ষমতার মূল হ'ল তাদের প্রাণক্রিয়ার ফলে জন্মান স্বভাবজাত রাসায়নিক অক্রিয়ক (ইনহিবিটর) পদার্থরা। বিজ্ঞানীদের ভাষায় এ সব পদার্থকে বলা হয় প্রতি-ব্যাধিজীবী (অ্যান্টি-বাইওটিক্) পদার্থ। রোগবীজাণুদের (ব্যাক্টিরিয়া) প্রতি-ব্যাধিজীবিতাকে (অ্যান্টি-বাইওসিস্) রোগ, নিবারণের কাজে লাগাবার কথা পাস্তরের মনেই প্রথম জাগে। কিন্তু তাঁর ধারণাকে হাতে-কলমে পরখ করে দেখবার চেষ্টা ১৮৯৯ সালে এমারিখ, (Emmerich) ও লো (Loew) নামে বিজ্ঞানীরাই প্রথম করেন। এমারিখ, ও লো'র প্রথম চেষ্টার পর থেকে কালে কালে বিজ্ঞানীরা রোগবীজাণুদের প্রতি- ব্যাধিজীবিতার অনেক নূতন নূতন তথ্য ও দৃষ্টান্ত আবিষ্কার করেছেন কিন্তু ১৯২৯ সাল পর্যন্ত কোনও প্রতি-ব্যাধিজীবী পদার্থের রোগ নিবারণে সফল প্রয়োগ সম্ভব হয়নি। এর পর ১৯২৯ সালে ফ্লেমিং যখন লণ্ডনের সেন্ট, মেরীর হাসপাতালে ব্যাধিজীব স্টাফাইলো- কক্কাসের (Staphylococcus) বৃদ্ধি ও ধর্ম নির্ণয় করবার জন্য গবেষণা করছিলেন সেই সময় আকস্মিকভাবে পেনিসিলিনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
জেলী জাতীয় বস্তু অ্যাগারের কঠিন মাধ্যমের (solid medium) ওপর স্টাফাইলোকক্কাস ও অন্যান্য ব্যাধিজীবরা অত্যন্ত সহজে পুষ্ট হয় ও বৃদ্ধি পায়। পরখ- শালায় ব্যাধিজীবদের বপন করে পালন ও পোষণ করবার জন্য অ্যাগারের মত উপযোগী পোষক পদার্থ আর নেই। সেখানে ঢাকনাওয়ালা কাচের চ্যাপ্টা কৌটো বা বাটির মধ্যে ব্যাধিজীবদের চাষ চলে।
অ্যাগারের পুরো নাম অ্যাগার-অ্যাগার (Agar-Agar)। ব্যাধিজীবদের পোষকমাধ্যম হিসাবে এর কার্যকারিতা উপলব্ধি করে তাকে ব্যবহারিক ব্যাধিজীবতত্বে (ব্যাকটিরিওলজি) জার্মান মহিলা-বিজ্ঞানী শ্রীযুক্তা হেসি (Frau Fammie E. Hesse) ১৮৮১ সালে প্রথম প্রয়োগ করেন। লাল শৈবাল গ্রেসিলারিয়া লাইকেনয়েড,স্কে (Gracilaria Lichenoides Herb): মালয়বাসীদের ভাষায় বলা হয় অ্যাগার-অ্যাগার এবং সেই কথাটি থেকে রক্ত-শৈবালাদি (Rhodophycae) গোত্রের সামুদ্রিক আগাছা থেকে তৈরী নাইট্রোজেনমুক্ত ব্যধিজীবপোষক উদ্ভিজ্জ জেলিজাতীয় পদার্থের নাম হয়েছে অ্যাগার-অ্যাগার বা অ্যাগার।
নানা জাতের ব্যাধিজীবদের অ্যাগারের ওপর প্রভাব নানারকমের হয়। কোন জাতের ব্যাধিজীবরা তাকে তরল করে দেয়, কোন কোন রোগবীজাণুরা পুষ্ট হয়ে নানা- রকমের রঙের জন্ম দেয়, কেউ বা আবার গ্যাসের বুদবুদ তৈরী করে অ্যাগারকে ফেনিয়ে বা গাঁজিয়ে তোলে। ব্যাধিজীবদের মত নানা জাতের ছত্রাকদের অ্যাগারের ওপর প্রতিক্রিয়াও নানা রকমের হয়। কাজেই বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সাহায্যে বিভিন্ন ছত্রাক বা ব্যাধিজীবদের অনায়াসে সনাক্ত করতে পারা যায়।
আমাদের চারিদিকে হাওয়ায় সবসময়ে এবং সর্বত্র অণুদেহী ব্যাধিজীবরা ও অণু-উদ্ভিদ ছত্রাকদের রেণুরা অলক্ষ্যে ভেসে বেড়াচ্ছে। ফ্লেমিং-এর গবেষণাগারের হাওয়াতেও তারা ছিল। ফ্লেমিং কয়েকটি পেটি-ডিসে অ্যাগার-মাধ্যমে ব্যাধিজীব স্টাফাইলোকক্কাস বপন করে • তাদের পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। ফ্লেমিং যে সময়ে তাঁর পরীক্ষাধীন ব্যাধিজীবদের একটি পুষ্টি- ক্ষেত্রের ঢাকা বার বার খুলছিলেন, সে সময় তাঁর অলক্ষ্যে বায়ু-বিহারী একজাতের ছত্রাকের একটি রেণু উড়ে এসে তাঁর পুষ্টিক্ষেত্রে আস্তানা নিলে। ফ্লেমিং তাঁর কাজ শেষ করে পুষ্টি- ক্ষেত্রটিকে সরিয়ে রাখলেন। কয়েকদিন কেটে গেল। ফ্লেমিং দেখলেন তাঁর পর্যবেক্ষণাধীন ব্যাধিজীবদের সঙ্গে সঙ্গে আর এক জাতের নবাগত সবুজরঙের ছত্রাকও সেখানে আস্তানা গেড়ে বংশবিস্তার করছে। ব্যাধিজীববিদদের কাছে ঘটনাটা নূতন নয়। অন্য সময় হলে এভাবে দূষিত পুষ্টি-ক্ষেত্রটিকে বাতিল করে অপর একটি পুষ্টিক্ষেত্র নিয়ে ফ্লেমিং হয়ত আবার
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment