বিয়ের দিনটাকে আশালতার মনে পড়ে।

'আশালতা পালংপাতা, আজকে আশার বিয়ে।

আশাকে নিয়ে যাবে তেলসিঁদুর দিয়ে।'

কি আশ্চর্য! তার নাম দিয়ে একটা ছড়া তৈরি হয়ে গিয়েছিল। বিয়েটা বড় আনন্দের। পুতুল খেলার ফাঁকে ফাঁকে, ঘরকন্নার কাজে মাকে সাহায্য করার মাঝে মাঝে বিয়ের কথাটা মনে পড়ে তাকে অবাক করে দিয়েছে। সুদূরের একটা অচেনা পুলকের আমেজ ছিল এই দুই আখেরের কথাটিতে। শুধু পুতুল খেলা নয়, আরো একটা খেলা তারা জানত, বিয়ে-বিয়ে খেলা।

'কাকটা বসে আছে পানের ডিবে নিয়ে

কোকিলটা বসে আছে তেলসিঁদুর নিয়ে।

যেমনি গেছলে ফুল কুড়োতে অমনি হোল বিয়ে।'

ঘরের পিছনে আম গাছের তলায় নিরিবিলিতে তাদের হঠাৎ এমনি করে বিয়ে হয়ে যেত।

শুনে মা খুব কাঁদত। তারা মাকে এই বলে প্রবোধ দিত-

মাগো মা কাইন্দ না

শ্যামার গলা ভাইঙ্গ না।

শ্যামা গেছল নদীর কূল।

দুইটা ছিল চম্পা ফুল।

চম্পা ফুলের গন্ধে

জামাই এল আনন্দে।

কাজেই তাদের আর কিছু করবার ছিল না বিয়ে দেওয়া ছাড়া। জামাইকে তারা সেধে আনেনি যে, দোষটা তাদের হবে। তবু বিয়েতে আনন্দ কত! বাড়িতে কত কুটুম আসে। সকলেই ভাল কাপড়চোপড় পরে, গয়নাগাটি পরে। কারো মুখে গোমড়া ভাব নেই। সকলের মুছে হাসি লেগেই আছে। সারা গাঁয়ের লোকজন সে বাড়িতে এসে ভেঙে পড়ে-বিয়ে দেখবার জন্য। কত ঢোল বাজে, ডগর বাজে, সানাই বাজে। তারপর কত খাওয়া-দাওয়া হয়।

ওঃ কত খাওয়া-দাওয়া!

আজ সেদিনের সেই খাওয়া-দাওয়ার কথাটাই আশালতার বেশি করে মনে পড়ছে। খাওয়া-দাওয়া তো অনেক হয়। কেষ্টদাস বৈরাগী একবার মচ্ছব দিয়েছিল। সে যে কি বিরাট ভোজ চোখে না দেখলে কি বিশ্বাস করা যায়। রাশি রাশি ভাত রাঁধা হয়েছিল। অত ভাত রাখবে কোথায়, না, একটা নৌকাতে। আরেকটা নৌকাতে ডাল। ঘাসের ওপর চার পাঁচটা বড় বড় মাদুর পাতা। তার ওপর বেগুন ভাজা আর তরকারির স্তূপ। অত

You Might Also Like

03 Comments

Leave A Comment

Don’t worry ! Your email address will not be published. Required fields are marked (*).

Get Newsletter

Advertisement

Voting Poll (Checkbox)

Voting Poll (Radio)

Readers Opinion