নীল বোর
বিজ্ঞান কংগ্রেস উপলক্ষে আজকাল প্রত্যেক বছরই বিদেশ থেকে শ্ৰেষ্ঠ বিজ্ঞানীরা এ দেশে নিমন্ত্রিত হয়ে আসেন। এবারে তাঁদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ব-বিশ্ৰুত প্রৌঢ় বিজ্ঞানী নিল বোর। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও সায়েন্স অ্যাসোসিয়েসন কর্তৃক আহূত হয়ে তিনি কলিকাতায় আসেন ও সেনেটে, অ্যাসোসিয়েসন সভায় ও নিউক্লিয়র ফিজিক্স আলয়ে বক্তৃতা দেন। এই মহাবিজ্ঞানীর দর্শন লাভে ও তাঁর বক্তৃতা শুনে কলিকাতাবাসী ধন্য হয়েছে।
শিক্ষিত সমাজে বোরের নাম অবিদিত নয় বললে ভুল হবে না। বিশ-শতকের শুরুতে পদার্থ-বিজ্ঞানে যে বিপ্লব ঘটে ও নব্য বিজ্ঞানের অভ্যুদয় হয়, বোর সেই বিপ্লবযজ্ঞের একজন পুরোহিত-প্রধান। প্লাঙ্ক যেমন কোয়ান্টাম বা শক্তি-কণাবাদ, আইনস্টাইন যেমন দৈর্ঘ্য প্রস্থাদি ও কাল গতি ভর প্রভৃতির সাপেক্ষতা ও রাদারফোর্ড যেমন কেন্দ্রিন বিদ্যুতিন সমাবেশে পরাণুর গঠন আবিষ্কার করে বিজ্ঞানে বিপ্লব সূচিত করেন, বোরও তেমনি প্লাঙ্কের কোয়ান্টামকে রাদারফোর্ডের পরাণু গঠনে প্রয়োগ করে বিপ্লব স্থায়ী ও নব্য বিজ্ঞানের যাত্রা জয়যুক্ত করেন।
উনিশ শতকের আদিতে, ১৮০৮ অব্দে ইংরাজ-বিজ্ঞানী ড্যাল্টন অণু-পৱাণু সমাবেশে পদার্থের সংগঠন বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে সম্পাদিত করেন। ড্যাল্টনের পরাণু হোল পদার্থবস্তুর সর্বশেষ ও ক্ষুদ্রতম অবিভাজ্য ব্যষ্টি। মৌল পদার্থের সংখ্যানুযায়ী মৌল পরাণু হোল বিরানব্বইটি ও তাদের যৌগিক-বন্ধে ভিন্ন ভিন্ন অণুর উদ্ভব। এর প্রায় একশ বছর পরে একদিকে ইউরেনিয়মখনিজের ও রেডিয়ামের তেজষ্ক্রিয়তা ও ঐগুলি থেকে নির্গত অ্যালফা, বিটা ও গামা রশ্মি আর অপরদিকে এক্সরে ইলেক্টন বা বিদ্যুতিনের আবিষ্কার ফলে পরাণুই পদার্থের অবিভাজ্য বস্তু—এ-মত বর্জিত হোল। ১৯১১ অব্দে রাদারফোর্ড ঘোষণা ও প্রমাণিত করলেন যে পরাণু মৌল-ব্যষ্টি নয়; তারও উপাদান ও স্থাপত্য আছে। পরাণু হোল যেন এক স্বল্পাকৃতি সৌরমণ্ডল, যার কেন্দ্রে আছে গুরুভর পজিটিভ কেন্দ্রিন ও তাকে প্রদক্ষিণ রত লঘু-ভর-নেগেটিভ বিদ্যুতিন,—এক থেকে বিরানব্বই সংখ্যক। কক্ষের আয়তন কেন্দ্রিন-বিদ্যুতিন আয়তনের লক্ষ-কোটি গুণ।
রাদারফোর্ড-কল্প পরাণু তেজষ্ক্রিয়তা ব্যাখ্যায় প্রধানাংশে কৃতসিদ্ধ হলেও অন্য এক বিষয়ে অসিদ্ধ হোল। হাইড্রোজেনের বর্ণালিতে—অন্যত্রও—একটা সমাবেশ শৃঙ্খলা দেখা যায় বিজ্ঞানীরা যার কোন অর্থ খুঁজে পান নি। রাদারফোর্ড কর্তৃক পরাণু স্থাপত্য আবিষ্কারে আশা হয়েছিল সে অর্থ খুঁজে পাওয়া যাবে, কিন্তু তা নির্মূল হোল। প্রচলিত গণিতানুসারে এই প্রদক্ষিণ বড় বিদ্যুতিন আলোকরশ্মি বিকীর্ণ করতে বাধ্য ও সেই আলোকের বর্ণালিতে পূর্বোক্ত শৃঙ্খলা বিদ্যমান থাকা উচিত। এদিকে আবার প্রদক্ষিণ ফলে বিদ্যুতিন-কক্ষ ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়ে কেন্দ্রিনে বিলীন ও তার ফলে পরাণুর লোপ অনিবার্য হওয়ার কথা। অর্থাৎ হাইড্রোজেন পরাণু রশ্মি দিতে ও সেই সঙ্গে লুপ্ত হতে বাধ্য।
এ হেঁয়ালির সমস্যাপূরণ করলেন নিল বোর, রাদারফোর্ডের আবিষ্কারের দু'বছর পরে। তিনি সিদ্ধান্ত করলেন রাদারফোর্ড বর্ণিত পরমাণু-স্থাপত্য ঠিকই; কিন্তু ইলেক্ট্রন কক্ষের অঙ্ক গণনায় প্রাচীন গণিত বাতিল করে আশ্রয় নিতে হবে প্লাঙ্ক উদ্ভাবিত নব্য-গণিতের—কোয়ান্টামের।
বোর সিদ্ধান্তের বিবরণ দেওয়ার পূর্বে কোয়ান্টাম বিষয়ে যৎকিঞ্চিত বলা দরকার। কোয়ান্টাম বিধির তাৎপর্য হল তাপ-বিকীরণ শক্তিকে নিরবচ্ছিন্ন না মনে করে তাকে গণ্য করা উচিত কণাসমষ্টি রূপে। এই সিদ্ধান্তে প্লাঙ্ক উপনীত হন ১৯০০ অব্দে তাপ বিকীরণের একটা বিসদৃশতার সূত্র সন্ধানে প্রত্যক্ষের সঙ্গে হিসাবের বিসদৃশতার মীমাংসার জন্য ইতিপূর্বে লর্ড রেলে, উইন, বোলজমান প্রভৃতি এক একটি মীমাংসা দাখিল করেন। তন্মধ্যে বোলজমানের সূত্রই হয়েছিল সমীচিন। এই সূত্রের সমর্থন সন্ধানে প্লাঙ্ক এই বিস্ময়কর সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে বিকীরণের শক্তি আসলে শক্তি-কণার সমষ্টি। একটা সহজ সূত্রও তিনি আবিষ্কার করেন—সে হল বিকীরণের স্পন্দন বা তরঙ্গ সংখ্যাকে একট| অভিন্ন অঙ্ক—যার নাম দেওয়া যেতে পারে ‘প্লাঙ্কাঙ্ক’—দিয়ে গুণ করলে পাওয়া যাবে তার শক্তি মাত্রা। শক্তিকে কণারূপে গণ্য করা সে সময়ের পক্ষে এমনই অর্বাচীন ছিল যে স্বয়ং প্লাঙ্ক তাকে নিঃসংশয়ে গ্রহণ করতে পারলেন না। অবশেষে একে সংশয়মুক্ত করে অবলুপ্তির হাত থেকে উদ্ধার করলেন পাঁচ বছর পরে, ১৯০৫ অব্দে, আইনস্টাইন। তিনি আলোকপাতে
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment