ন্যাংটার দেশে
বশীরুল্লাহ ক্বারীর মিঠে আজানের আগে, চৌধুরীদের লাল ঝুঁটি-উঁচানো মোরগ-ডাকেরও অনেক আগে আমিনের বাপ ঘরের মধ্যে গরগর করে ওঠে, ঘাড়ের রগগুলো ফুলে ফুলে উঠে থরথর করে কাঁপছে। কিন্তু সে অশ্লীল অকথ্য গালিগালাজের বিরাম নেই; কলেরাগ্রস্ত রোগীর কুৎসিত বমির মতো কেবল গলগল করে বেরুচ্ছেই। কিছু নিজের কুমারী মেয়েকে উদ্দেশ করে, কিছু বউকে, কিছু নিজের মৃত মাকে। আর সবগুলোই গর্ভসংক্রান্ত। যে জাতির আবরু রক্ষা করতে, সমস্ত শরীর ঢাকতে কাপড়-সোনার কাপড়, বারো হাত তেরো হাত লেপটে নিতে হয়, স্তনে স্তনে উরুতে উরুতে থেঁতলে আমিনার বাপ আজ তাদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়।
কুয়াশাচ্ছন্ন আবছা উঠানে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আমিনার বাপ আরেকবার চাপা গর্জন করে উঠল। রুক্ষ কঠিন হাড়ের কাঠামোর মধ্য দিয়ে অতীতের বিরাট বলিষ্ঠ পুরুষটিকে চিনতে কষ্ট হয় না। দীর্ঘ নগ্ন দেহের মধ্যখানে শুধু অস্পষ্ট পাতলা একফালি ন্যাকড়ামতো গামছা জড়ানো।
দুহাত দিয়ে বিশাল দুর্বল দুই উরু চেপে ধরে বিড়বিড় করে কী বলল। চিৎকার করে খোদাকে ডাকল, প্রতিজ্ঞা করল শহর থেকে আজ কাপড় না নিয়ে সে ফিরবে না। এই ন্যাংটা উরুর কাপড় না এনে মা-মেয়েকে কোনো দিন সে আর দেখবে না। দেখাবে না। দেখতেও দেবে না।
ভাঙা বেড়ার ফাঁক দিয়ে দু-জোড়া ঝাপসা চোখ স্থির হয়ে দেখে কী করে আমিনার বাপ বড় বড় পা ফেলে কুয়াশার মধ্যে মিলিয়ে গেল শহরের পথে।
শহর মানে, নোয়াখালী শহর। এখান থেকে কম করে হলেও ত্রিশ মাইল হবে। মইয়ের মতো হাড় বের করা অত বড় পা দিয়ে একটানা চললেও চব্বিশ ঘণ্টার আগে আমিনার বাপ কখনো ফিরতে পারবে না। হঠাৎ একটা ব্যাঙ দেখতে পেয়ে খুশিতে মকুর চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে। সন্তর্পণে ডান পা'টা তুলে আরেকটু সামনে ফেলে। পাকা শিকারির পা, পানি নড়ল কিন্তু শব্দ হলো না। ব্যাঙটা তার চেয়েও পাকা, মকুর খাপ পাতা হাত ক্ষিপ্র বেগে এগিয়ে আসবার আগেই তিড়িক করে এক লাফে আর একটা ধানের গোড়ায় গিয়ে বসে। দুলে ওঠা ধানশিষটার দিকে নজর রাখতে রাখতে মকু হতচ্ছাড়া ব্যাঙটার চৌদ্দ পুরুষের সঙ্গে মুখে মুখে একবার যৌন সঙ্গম করে ফেলে। তারপরই পা টিপে টিপে মকু শেওলা পড়া ধানের জলা ঠেলে খুঁজতে থাকে ব্যাঙ। ডোরাকাটা সোনালি হলদে চকচকে খুদে ব্যাঙ। এই ভরসন্ধ্যার আবছা আলোতেও চকচক করে জ্বলে ওগুলোর রং। হোক্কা ভাই বলেছে এ ব্যাঙগুলো নাকি শোল মাছের চরম টোপ। ভোররাতের অন্ধকারে চৌধুরীদের ছাড়া পুকুরের পাড় দিয়ে পানির ওপর একবার নাচাতে পারলেই হলো। গপাগপ ধরবে।
কোমরে বাঁধা ব্যাঙের পুঁটলিটা একবার টিপে দেখে শুকনো। আরও কিছু ধরতেই হবে। একটা তুলতুলে ব্যাঙ হাতের মুঠোয় থেঁতলে আধমরা করে কোমরে গুঁজতে গুঁজতে ওর হঠাৎ আমিনার কথা মনে পড়ে।
দুপুরের শেষ দিকে চারিদিকে যখন নিরালা হয়ে আসে আমিনা তখন পুকুরে পানি নিতে আসে। আজও এসেছিল মাকে ঘরে বসিয়ে মার নীল শাড়িটা পরে। একে তো আমিনার বাড়ন্ত গড়নের পরিপুষ্ট শরীরে মায়ের ক্ষয়ে যাওয়া পুরোনো শাড়ি ভালো করে বেড় খায় না, তার ওপর চারিদিকে যখন কেউ নেই কিংবা কেউ আছে জেনেই যেন আমিনার হাতের টানে কাঁখের কলসির চাপে শাড়িটা আরও ছোট হয়ে সরে পড়ে যেতে চায়। কলসির ধাক্কায় পা না সরিয়ে আমিনা একবার এদিক- সেদিক কাকে খোঁজে। না পেয়ে আরও জোরে ধাক্কা দিয়ে আবার চোখ তুলে এদিক-সেদিক দেখে। বিরক্ত হয়ে ঢকঢক করে কলসি ভরে আমিনা উঠে দাঁড়াতেই দেখে বড় নারকেলগাছটার আড়াল থেকে মুখ বার করে মকু হাসছে, পরনে তার একটা লাল-সবুজ ডোরাদার নতুন গামছা, পরিপাটি করে কাছা দেয়া। আঁচলের কোনো বাড়তি অংশ ছিল না। তবু
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment