নির্জন স্বাক্ষর
তুমি তা জানো না কিছু—না জানিলে,
আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য করে;
যখন ঝরিয়া যাবো হেমন্তের ঝড়ে’—
পথের পাতার মতো তুমিও তখন
আমার বুকের ’পরে শুয়ে রবে?
অনেক ঘুমের ঘোরে ভরিবে কি মন
সেদিন তোমার!
তোমার এ জীবনের ধার
ক্ষ’য়ে যাবে সেদিন সকল?
আমার বুকের ’পরে সেই রাতে জমেছে যে শিশিরের জল,
তুমিও কি চেয়েছিলে শুধু তাই;
শুধু তার স্বাদ
তোমারে কি শান্তি দেবে;
আমি ঝ’রে যাবো–তবু জীবন অগাধ
তোমারে রাখিবে ধ’রে সেইদিন পৃথিবীর ’পরে,
—আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য করে।
রয়েছি সবুজ মাঠে—ঘাসে—
আকাশ ছডায়ে আছে নীল হ’য়ে আকাশে-আকাশে;
জীবনের রং তবু ফলানো কি হয়
এই সব ছুঁয়ে ছেনে’;—সে এক বিস্ময়
পৃথিবীতে নাই তাহা—আকাশেও নাই তার স্থল,
চেনে নাই তারে ওই সমুদ্রের জল;
রাতে-রাতে হেঁটে-হেঁটে নক্ষত্রের সনে
তারে আমি পাই নাই; কোনো এক মানুষীর মনে
কোনো এক মানুষের তরে
যে-জিনিস বেঁচে থাকে হৃদয়ের গভীর গহ্বরে
নক্ষত্রের চেয়ে আরো নিঃশব্দ আসনে
কোনো এক মানুষের তরে এক মানুষীর মনে।
একবার কথা ক’য়ে দেশ আর দিকের দেবতা
বোবা হয়ে পড়ে থাকে—ভুলে যায় কথা;
যে-আগুন উঠেছিলো তাদের চোখের তলে জ্ব'লে
নিভে যায়—ডুবে যায়—তারা যায় স্খ’লে।
নতুন আকাঙ্ক্ষা আসে—চ’লে আসে নতুন সময়—
পুরানো সে-নক্ষত্রের দিন শেষ হয়
নতুনেরা আসিতেছে ব’লে;
আমার বুকের থেকে তবুও কি পড়িয়াছে স্খ’লে
কোনো এক মানুষীর তরে
যেই প্রেম জ্বালায়েছি পুরোহিত হয়ে তার বুকের উপরে।
আমি সেই পুরোহিত—সেই পুরোহিত।
যে-নক্ষত্র ম’রে যায়, তাহার বুকের শীত
লাগিতেছে আমার শরীরে—
যেই তারা জেগে আছে, তার দিকে ফিরে
তুমি আছো জেগে—
যে-আকাশ জ্বলিতেছে, তার মতো মনের আবেগে
জেগে আছো;
জানিয়াছো তুমি এক নিশ্চয়তা—হয়েছো নিশ্চয়।
হ’য়ে যায় আকাশের তলে কতো আলো—কতো আগুনের ক্ষয়;
কতোবার বর্তমান হ’য়ে গেছে ব্যথিত অতীত—
তবুও তোমার বুকে লাগে নাই শীত
যে-নক্ষত্র ঝ’রে যায় তার।
যে-পৃথিবী জেগে আছে, তার ঘাস—আকাশ তোমার।
জীবনের স্বাদ ল’য়ে
জীবনানন্দ দাস
জীবনানন্দ দাস, বিংশ শতাব্দীর অন্যতম কবি, লেখক ও শিক্ষাবিদ জীবনানন্দ দাশের আদি নিবাস বিক্রমপুরের গাওপাড়া গ্রামে হলেও জন্মগ্রহণ করেন বরিশাল শহরে। তাঁর বাবা সত্যানন্দ দাশ ছিলেন স্কুলশিক্ষক ও সমাজসেবক এবং মা কুসুমকুমারী দাশ ছিলেন একজন কবি। জীবনানন্দ বরিশাল ব্রজমোহন স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (১৯১৫), বি এম কলেজ থেকে আইএ (১৯১৭) এবং কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বিএ (১৯১৯) ও ইংরেজিতে এমএ (১৯২১) পাস করেন। তিনি কলকাতা সিটি কলেজে ১৯২২ সালে ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যাপনা শুরু করে ১৯২৯ সালে সদ্য প্রতিষ্ঠিত বাগেরহাট প্রফুল্লচন্দ্র কলেজ, দিল্লির রামযশ কলেজ (১৯২৯), বরিশালের বিএম কলেজে (১৯৩৫) অধ্যাপনা পেশায় অতিবাহিত হয়। জীবনানন্দের কাব্যচর্চার শুরু অল্পবয়স থেকেই। মূলত কবি হলেও তিনি অসংখ্য ছোটগল্প, কয়েকটি উপন্যাস ও প্রবন্ধগ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ঝরাপালক প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে। তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলো হচ্ছে—ধূসর পান্ডুলিপি (১৯৩৬), বনলতা সেন (১৯৪২), মহাপৃথিবী (১৯৪৪), সাতটি তারার তিমির (১৯৪৮), রূপসী বাংলা (রচনাকাল ১৯৩৪, প্রকাশকাল ১৯৫৭), বেলা অবেলা কালবেলা (১৯৬১)। ঔপন্যাসিক ও গল্পকার হিসেবে জীবনানন্দের স্বতন্ত্র প্রতিভা ও নিভৃত সাধনার উন্মোচন ঘটে মৃত্যুর পরে প্রাপ্ত অসংখ্য পান্ডুলিপিতে। উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে—মাল্যবান, সুতীর্থ, জলপাইহাটি, জীবনপ্রণালী, বাসমতীর উপাখ্যান ইত্যাদি। তাঁর রচিত গল্পের সংখ্যা প্রায় দুশতাধিক।
-
প্রথম পরিচ্ছেদ
নয়নজোড়ের জমিদারেরা এককালে বাবু বলিয়া বিশেষ বিখ্যাত ছিলেন। তখনকার কালের বাবুয়ানার আদর্শ বড়ো সহজ ছিল না। এখন যেমন রাজা-রায়বাহাদুর খেতাব অর্জন করিতে অনেক খানা নাচ ঘোড়দৌড় এবং সেলাম-সুপারিশের শ্রাদ্ধ করিতে হয়, তখনো সাধারণের নিকট হইতে বাবু উপাধি লাভ করিতে বিস্তর দুঃসাধ্য তপশ্চরণ করিতে হইত।আমাদের নয়নজোড়ের বাবুরা পাড় ছিঁড়িয়া
-
মানুষের সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনের উপর সাহিত্যের প্রভাব যে অসামান্য, তাহা বোধ হয় কেহই অস্বীকার করিবেন না। সুতরাং সাহিত্যের স্বরূপ কিরূপ হওয়া আবশ্যক সে সম্বন্ধে আমাদের স্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত। সুসাহিত্য মানবজীবনকে পূর্ণতার অভিমুখে লইয়া যায়, অন্যদিকে অসৎ সাহিত্য, মানবজীবনকে অধোগামী করে। সুতরাং সমাজের নিকট সাহিত্যিকের গুরু দায়িত্ব আছে। যাঁহারা
Leave A Comment
Stay Connected
Get Newsletter
Subscribe to our newsletter to get latest news, popular news and exclusive updates.
Featured News
-
Long established fact that a reader will be distracted
- by Ninurta
- 16 April 2017
-
Long established fact that a reader will be distracted
- by Ninurta
- 16 April 2017
-
Long established fact that a reader will be distracted
- by Ninurta
- 16 April 2017
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment