হাইকোর্ট মাজার : এ টেল অব অ্যানাদার লালসালু
ফটোগ্রাফ: ওয়ান
জটাধারী একজন লোক, গায়ে বস্ত্রাবরণ বলতে কোমরের কাছে এক টুকরো চট, চোখ বন্ধ করে বিড়বিড়িয়ে দুর্বোধ্য ভাষায় কি যেন বলছেন। তার ডান হাত সামনে প্রসারিত করে রেখেছেন এক তরুণের মাথায়। তরুণটি মাথা নিচু করে আছে। মন্ত্র পড়া এক সময় শেষ হলো। অতঃপর চট পরিহিত লোকটি তরুণের মুখে জোরে জোরে ফুঁ দিতে শুরু করলেন। ফুঁ শেষ করে বললেন, “বাড়ি যাইয়া ঘুমা।” তরুণটি তোতলাতে তোতলাতে বললেন, “হুজুর আমি কি এখন থেকে কবিতা পড়তে পারব, নাটক করতে পারব?”
“পারবি, পারবি, আল্লায় দিলে—সব পারবি, আর একটা কথা কইলাম মনে রাহিস, কাউরে টাকা পয়সা দিবিনা,” বলতে বলতে ফকির সাহেব উদাস হয়ে চোখ মুদলেন। তরুণটি মানিব্যাগ থেকে দুটো একশো টাকার নোট বের করে ফকিরের হাতে দিয়ে বললেন, “হুজুর টাকাটা রাখেন, সামনের সপ্তাহে আবার আসব।”
তরুণটির সাথে আলাপ করে জানা গেলো সে এসেছে তোতলামী ভাল করার জন্য, তার খুব ইচ্ছা টিভিতে প্যাকেজ নাটকে অংশ নেয়া, কিন্তু মুখের এ জড়তার জন্য ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে না। এ বছর ঢাকার একটি কলেজ থেকে বি. এস. সি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তিনি পর পর তিন সপ্তাহ ধরে আসছেন ফকিরের কাছে। অগ্রগতির কথা জানতে চাইলে বললেন, “যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে”। কতটুকু উপকার হচ্ছে বোঝা গেল না, কারণ তিনি প্রতিটি কথাই বলছেন প্রচণ্ড তোতলাতে তোতলাতে। যাওয়ার আগে উপদেশ দিলেন, “আপনার কোনো অসুবিধা থাকলে ফকিরের কাছে যান, ইনশাল্লাহ ভালো হয়ে যাবেন”।
মো. হানিফ মিয়ার বয়স ত্রিশের মতো। এসেছেন গাজীপুর থেকে। তার বাবা প্যারালাইসিসে ভুগছেন দীর্ঘদিন। ফকির প্যারালাইসিস ভাল করেন বিশ্বাস করেন মনে প্রাণে। ফকির সাহেব চিকিৎসা করলেন। প্রথমে টিপে টিপে দেখলেন। পরে দোয়া পড়ে ফুঁ দিতে শুরু করলেন। এটাই নাকি প্যারালাইসিস চিকিৎসা করার পদ্ধতি, পরে অবশ্য একটা তাবিজ ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “এইটা রাহেন, মাজায় লাগাইবেন কালা সুতা দিয়া। আর সামনের মাসে একবার কষ্ট কইরা আইয়েন।” মৃদু হেসে আবার শুরু করলেন, “থাকনের অসুবিধা হইলে আমার বাসায়ই থাকবেন। গরীব হইতে পারি, কিন্তু ইনশাল্লাহ একশো জন মানষের থাকনের জায়গা দিতে পারুম।” ফকির সাহেবের গায়ে শাদা হাওয়াই শার্ট এবং শাদা লুঙ্গি। বড় বড় লম্বা চুল, কেশ পরিপাটি করে আঁচড়ানো। হানিফ সাহেবদের ঢাকায় কোনো থাকার জায়গা নেই। বাস থেকে নেমে সোজা ফকিরের কাছে আসেন এবং চিকিৎসা শেষে ফিরে যান। বাবার প্যারালাইসিস বলে কোলে করে রিকশা-বাসে ওঠাতে হয়। হানিফ সাহেব নিজে গাজীপুর শহরে একটি স্টেশনারী দোকান চালান। ডাক্তার দেখিয়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে অসম্মতি সূচক মাথা নাড়লেন।
ফটোগ্রাফ: টু
সূর্য তখনও অস্ত যায়নি পুরোপুরি। স্ট্রীট লাইটগুলো অপেক্ষা করছে জ্বলে ওঠার। এক উৎসব উৎসব আমেজ বিরাজ করছে। সকালের চাইতে দর্শনার্থীদের সংখ্যাও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। সকালে যেসব স্টল গুটিয়ে রাখা ছিল সেগুলোতে এখন পুরোপুরি ব্যস্ততা। সেখানে বিক্রি হচ্ছে মোমবাতি, আগরবাতি, গোলাপজল, তাবিজ, মালা, পাথর, আংটি, হাতের বালা ইত্যাদি নানা সামগি। চায়ের দোকানও রয়েছে বেশ কয়েকটা। সন্ধ্যার পর যে চিকিৎসা সবচেয়ে বেশি হচ্ছে তাহলো জণ্ডিস। চিকিৎসা করা হয় নানা পদ্ধতিতে। হাত পা ধুয়ে দেন ফকির সাহেব। তাতে নাকি মন্ত্রপুত পানির সাথে হলুদ জণ্ডিস বেরিয়ে যায়। অবশ্য আবছা অন্ধকারে চিকিৎসা করা হয় বলে পানির রং হলুদ না সবুজ বোঝার উপায় থাকেনা। পানি দিয়ে ধোয়ার পর গলায় একটি মালা ঝুলিয়ে দেন। এরকম অন্তত গোটা দশেক জণ্ডিস চিকিৎসালয় চোখে পড়বে। এক মহিলা তার ছেলের জণ্ডিসের চিকিৎসার জন্য এসেছেন। মহিলার দৃঢ়বিশ্বাস শুধুমাত্র এতেই তার ছেলে সুস্থ হয়ে উঠবে।
হাতের হাড় ভেঙ্গেছে দশ বার বছর বয়সী একটি মেয়ের। ভাঙ্গার জায়গাটি বেঢপভাবে ফুলে আছে। ফকির
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment