অনুবাদক: তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়

শয্যা-থলির কবোষ্ণ আবেষ্টনে নিশ্চিন্ত মনে বেশ কিছুক্ষণ ঘুমিয়েছিল রবার্ট জর্ডান। পিস্তলটা মণিবন্ধে বেধে রেখেছিল সে। সহসা মারিয়ার কোমল করস্পর্শে শিরশির করে উঠল তার সারা শরীর। মারিয়া শীতে কাঁপছিল। জর্ডান তাকে বুকে টেন নিল। প্রথমটা সে থলির ভেতর ঢুকতে চায়নি। বারবার বলেছিল, 'লক্ষ্মীটি, আমায় ছেড়ে দাও। আমার ভয় করছে।' লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিল সে। অবশেষে থলিতে ঢুকেছিল সে। জর্ডান তার ঘাড়ের নরম জায়গাটায় চুমু খেল। মারিয়া আবার বললে, 'না' লজ্জায় লাল হয়ো না। আমি কিছুতেই পারব না—অ্যমায় ছেড়ে দাও।' উঠেছে তার মুখ। জর্ডান বলে, 'দুষ্টুমি কারো না মারিয়া।'

—'আমায় ছাড়।'

—'সোনামণি, আমি তোমায় ভালোবাসি।'

—'আমিও কি তোমায় ভালোবাসিনা,' মুদুকণ্ঠে মারিয়া বলে।

জর্ডান তার সর্বাঙ্গে আদর করতে লাগল। মারিয়া বালিশে মুখ গুজে শুয়েছিল। মুখ তুলতেই তার ভিজে ঠোঁটে জর্ডানের ঠোঁটের মিষ্টি ছোঁওয়া লাগল। মারিয়ার চোখ জলে ভরে উঠল। জর্ডানের বলিষ্ঠ বাহুর মাঝে এখন সে বন্দী। মারিয়ার যৌবনের ফসল, অনতিউচ্চ তপ্ত স্তনে আদর করে সে; অনুভব করল তার যৌবনবতী শরীরের প্রতিটি উষ্ণ খাঁজ, সৌরভ আর রোমাঞ্চ।

মারিয়ার জলে ভেজা চোখে চুমু খেল সে—স্বাদ পেল লবণাক্ত অশ্রুর।

মারিয়া বললে, 'তোমায় চুমু দিতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু বিশ্বাস কর আমি জানি না কিভাবে চুমু দিতে হয়।'

—'থাক, তোমায় আর চুমু দিতে হবে না।'

—'তোমায় আমি চুমু দেবই। কোন কিছুই বাদ দিতে চাই না। আজ সমস্ত কিছুই করব।'

—'এত জামা কাপড় থাকলে ভালো লাগে না।'

—'অসভ্য।'

জর্ডান মারিয়াকে নগ্ন করে। তার নিরাবরণ শরীর নিয়ে খেলা করে। প্রশ্ন করে, 'কেমন লাগছে?'

—'খুব ভালো লাগছে। কিন্তু আমায় তুমি ফেলে যাবে না তো? তোমার সঙ্গে যাব আমি। সব সময়ে তোমাকে পেতে চাই। কোন আশ্রমে যাব না আমি।'

—'কিন্তু আশ্রমেই যেতে হবে তোমাকে।'

—'না জর্ডান, না। আমি তোমার সঙ্গে থাকবো। আমি তোমার হব।'

শুয়ে আছে তারা, অনুভব করছে মিলনের শিহরণ। কী নিবিড় আনন্দ, গভীর পরিতৃপ্তি? একে অপরের মাঝে হারিয়ে গেছে তারা। কিন্তু এক হয়ে যাওয়ার আনন্দের মাঝে কেমন যেন একটা বিষাদের সুর ধ্বণিত হচ্ছে। জর্ডান জিজ্ঞেস করে, 'মারিয়া, আর কারুকে ভালোবেসেছ তুমি?'

—'না।' তবে...

—'তবে...কি?'

—'অনেকের পাশবিক অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছিল আমাকে।' চুপ করে থাকে জর্ডান। তার আবেগে একটু ভাঁটা পড়েছে মায়িয়া তা বুঝতে পারে। অদম্য অভিমানে মারিয়ার গলা ধরে আসে। সে বলে, 'জানি, আমার আর তোমার ভালোবাসা সম্ভব নয়। বেশ, আশ্রমেই যাব আমি। শুধু তোমার হয়ে থাকব সে ভাগ্য আমার নয়।'

—'ছিঃ মারিয়া। ওসব কথা বলো না। বিশ্বাস করো তোমায় আমি ভালোবাসি।'

—'না গো, আমি জানি, আর আমায় ভালোবাসতে পারবে না তুমি, কিন্তু চুমু দেওয়ার ব্যাপারে সত্যিই আমি অনভিজ্ঞা। পশুগুলি যখন একে একে আমায় ধর্ষন করছিল প্রতিবারেই মরণপণ সংগ্রাম করেছিলাম আমি। বাধা দিয়েছিলাম, কামড়ে ক্ষত-বিক্ষত করেছি তাদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হেরে গিয়েছিলাম আমি।'

—'থাক না ওসব কথা। আমি তোমায় ভালোবাসি। আমায় একটা চুমু দেবে মারিয়া?'

জর্ডানের গালে চুমু দিল মারিয়া। একটু হেসে বলে, 'ঠিক হলো তো? বল না গো নাকটা কোথায় ঠেকবে?'

জর্ডান মারিয়ার সারা গায়ে চুমু খেল। মিলনের এ আনন্দ কোনদিন পায়নি জর্ডান। সে মারিয়াকে জিজ্ঞেস করে, 'তুমি কি জানতে, আমার কাছেই তুমি আজ শোবে?'

—'হ্যাঁ। তাই তো জুতো খুলে এসেছিলাম।'

—'ভয় করেনি, তোমার?'

—'প্রথমটা ভয় করেছিল খুব।'

—'মারিয়া, বলতে পার ক'টা বাজে এখন?'

—'কেন তোমার হাতে ঘড়ি নেই?'

—'ঘড়িটাকে চেপে শুয়ে আছ তুমি। দেখব কি করে?'

—'কেন, আমার ওপর দিয়ে ঝুঁকে পড়ে দেখা যায় না বুঝি?'

জর্ডান ঘড়ি দেখে। রাত একটা। মারিয়া বলে, 'কাঁধে তোমার দাড়ির খোঁচা লাগছে।

—'কি করব বল। দাড়ি কামানোর যন্ত্রপাতি সঙ্গে নেই।'

—'তোমার দাড়ি বাদামী, না?'

—'হ্যাঁ।'

—'জান জর্ডান, তোমার আমার মিলনের মধ্যে দিয়েই আমি সেদিনের পাশবিক অত্যাচারের ভয়াবহ স্মৃতিটুকু মুছে ফেলতে চাই। ধর্ষণের পর আত্মঘাতিনী হতে চেয়েছিলাম। আজ মনে হচ্ছে সেদিন যদি আত্মহত্যা করতাম তাহলে আজকের এ চরম পাওয়ার পরিতৃপ্তিটুকু থেকে বঞ্চিত হতে হতো। পিলার বলেছিল, যদি কোনদিন সত্যিকারের ভালোবাসা পাও তাহলে এ অপমান আর দুঃখের বোঝা আর বইতে হবে না। আজ বুঝছি, ঠিকই বলেছিল সে।'

—'মারিয়া, কোনদিন ভাবিনি কেউ আমার হবে। কিন্তু আজ তোমাকে পেয়েছি, নিজেকেও সঁপে দিয়েছি তোমার কাছে।'

এবার আর ভুল হলো না, মারিয়া ঠিক ঠিক চুমু খেল জর্ডানের ঠোঁটে।

অদ্ভুত একটা অনুভূতি আচ্ছন্ন করল জর্ডানকে। তার মনে হলো মারিয়ার মন থেকে মুছে দিতে হবে ধর্ষণের ক্লেদাক্ত সেই স্মৃতিটুকু।

রাতের নির্জনতায়, হাড়-কাঁপানো ঠান্ডায় মিলনোত্তর প্রশান্তিতে তারা ঘুমাচ্ছিল। তারার মালা পরে ঝিকমিক করছিল সারা আকাশ। মুহূর্তের জন্য জর্ডানের ঘুম ভাঙল। মারিয়াকে চুমু খেল সে। তার মতো মারিয়াও আজ তৃপ্ত—ঘুম ভাঙল না তার।

সকালে ঘুম ভাঙল জর্ডানের। মারিয়া নিঃশব্দে কখন চলে গেছে। সে যেখানে শুয়েছিল, সে জায়গাটা তখনও গরম ছিল।

☆‌ ☆‌ ☆‌

লতাপাতা গুল্ম ঢাকা পাহাড়ী পথ ধরে হাঁটছিল তারা। মাথার ওপর ঝকঝক করছিল পরিছন্ন সূর্য। তুষার ভেজা ঠান্ডা হাওয়া লাগছিল তাদের পিঠে। মারিয়ার হাত ধরে হাঁটছিল জর্ডান। পারস্পারিক স্পর্শটুকু মধুর লাগছিল উভয়ের। সূর্যরশিন ঝরে পড়ছে মারিয়ার রেশমি চুলে, ঝলমলে মুখে। জর্ডানের আলিঙ্গনে ধরা দিল মারিয়া। মারিয়ার জামার আবরণ ভেদ করে জর্ডান মারিয়ার জামার তার সুন্দর স্তন দু'টি জর্ডানের বুকে এসে লাগছিল। বোতাম খুলে তার বুকের সৈকতে, শুনে চুমু খেল। কেঁপে কেঁপে উঠছিল মারিয়া। অরণ্যের বনো গন্ধ ভাসছিল। মারিয়ার তৃপ্তি-নিমীলিত চোখে রোদ পড়েছে। একবার চোখ মেলে তাকাল সে জর্ডানের দিকে—সুন্দর হাসিতে তার মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল।

পাহাড়ীর নদীর পাশ কাটিয়ে আবার তাঁরা হাঁটতে লাগল। জর্ডান বললে, 'সত্যিই সুশ্রী সুন্দরী তুমি।'

মারিয়া বলে, 'সুন্দরী না ছাই। আচ্ছা জর্ডান, মিলনের এমন অনুভূতি এর আগে আর কোন দিন তোমার হয়েছে? মনে হচ্ছিল আনন্দে যেন শূন্যে ভাসছিলাম আমি।'

—'কয়েকটি মেয়েকে ভালো লেগেছিল, সে তো নিছক ভালো লাগা। কিন্তু আর কোনদিন এমন তৃপ্তি পাইনি।'

—'সত্যি বলছ?'

—'হ্যাঁ।'

—'দেখবে এরপর আরও সুন্দর হব আমি। আরও অনেক আনন্দ দেব তোমাকে।'

—'আমায় যা দিয়েছ, তুলনা হয় না তার।'

☆‌ ☆‌ ☆‌

মারিয়া বলে, 'লক্ষীটি, আমার পা দু'টি ধরো না—ভীষণ ঠাণ্ডা হয়ে গেছে।'

—'পা দুটো এগিয়ে দাও, আমি গরম করে দিই।'

—'দুখুটুমি কারো না, এখুনি আমার পা গরম হয়ে যাবে। আচ্ছা জর্ডান তুমি সত্যি সত্যি আমায় ভালোবাস তো?'

—'কতবার বলব বলতো? বিশ্বাস কর, তোমায় আমি ভালোবাসি।'

—আমিও ভালবাসি তোমায়—খুব ভালবাসি। আমি তোমার মেয়েমানুষ তোমার বৌ।'

জর্ডান বললে, 'যদি তোমার শীত না লাগে, জামাটা একটু খুলবে।'

—'শীত করবে কেন! তোমার আদুরে ছোঁয়ায় গায়ে আমার পুলক লাগে আগুন জ্বলে।'

—'তোমাকে দেখলে আমার শরীরেও কামনার আগুন লাগে।

-'কিন্তু একটু পরেই তো তোমার শীত করবে।'

—'নাগো না। আমি তো তোমার মাঝে হারিয়ে যাব।'

—'মারিয়া।'

—'কি বল।'

—'মারিয়া।'

—'দুষ্টুমি করো না। এ সময় কথা বলতে ভালো লাগে না। চুপ।'

—'শীত করছে?'

—'না। লক্ষক্ষ্মীটি চুপ কর। আমায় অনুভব করতে দাও। উঃ কি অসহ্য আরাম।'

—'মারিয়া। মারিয়া। মারিয়া।'

মিলনের মধুর উষ্ণতা অনুভব করার পর নগ্ন দেহে শুয়ে আছে তারা।

মারিয়া জিজ্ঞেস করে, 'কেমন লাগল

লগইন করুন? লগইন করুন

বাকি অংশ পড়তে,

সাবস্ক্রাইব করুন

প্রারম্ভিক অফারটি


লেখাটি পড়তে
অথবা

সাবস্ক্রাইব করে থাকলে

লগইন করুন

You Might Also Like

03 Comments

Leave A Comment

Don’t worry ! Your email address will not be published. Required fields are marked (*).

Get Newsletter

Advertisement

Voting Poll (Checkbox)

Voting Poll (Radio)

Readers Opinion