বাংলাদেশের পথ বিঘ্নসঙ্কুল
ছ’বছর আগে ১৯৭৩ সালে আমাদের পার্টি দ্বিতীয় কংগ্রেসে বাংলাদেশের জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের কার্যক্রম ও রণনীতি গ্রহণ করেছিল এবং এর মধ্য দিয়ে অপুঁজিবাদী বিকাশের ধারায় সমাজতন্ত্র অর্জনের জন্যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। বর্তমানেও আমরা এই সুদূর প্রসারী লক্ষ্যে উপনীত হবার জন্যেই কাজ করে যাচ্ছি এবং আমাদের দেশের সামাজিক বিকাশকে প্রগতিশীল পথে নিতে চেষ্টা করছি। দ্বিতীয় কংগ্রেসের পরে বহু ঘটনা ঘটে গিয়েছে। বিগত বছরগুলি আমাদের পক্ষে তেমন অনুকূল হয়নি। এই বছরগুলিতে আমাদের দেশবাসীর জীবনে অবস্থার পরিবর্তনের জন্যে এবং শ্রমজীবী জনগণের একটা উত্তম ভবিষ্যৎকে নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে আমাদের পার্টি কঠোর সংগ্রাম করে আাসছে। এতে প্রায়ই অপ্রত্যাশিত বাঁকের সম্মুখীন হতে হয়েছে পার্টিকে।
সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের পরে দু’বছর যেতে না যেতেই দেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অবস্থাতে পার্টির রণনীতির বাস্তবায়নের জন্যে কতকগুলো সুবিধাজনক উপাদান পাওয়া গিয়েছিল। পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেস নিম্নোক্তভাবে সেই অবস্থার পরিমাপ করেছিল:
“স্বাধীনতা অর্জনের ফলশ্রুতি হিসেবে বাংলাদেশ সাম্রাজ্যবাদের এবং বিশেষ করে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে পাকিস্তানী আমলের জড়িয়ে পড়া অসম অর্থনৈতিক ও সামরিক চুক্তি থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পেরেছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা স্বাধীন ও জোটনিরপেক্ষ নীতি অবলম্বিত হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও অনান্য সমাজতান্ত্রিক দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে।
সমস্ত দেশীয় ব্যাঙ্ক ও বীমা সহ পাট, সুতিবস্ত্র ও চিনিশিল্প এবং বৈদেশিক, বণিজ্যের শাঁসালো অংশ জাতীয়কৃত হয়েছে। এই সব ক্ষেত্রে বাঙ্গালী পুঁজিপতিদের সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সরকার ব্যক্তিক শিল্পোদ্যোগে পুঁজি বিনিয়োগের সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে ৩৫ লক্ষ টাকা। ব্যক্তিক শিল্পোদ্যোগে বিদেশী পুঁজির সঙ্গে সহযোগিতাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সব ব্যবস্থার ফলে পুঁজিবাদের বল্লাহীন প্রসারের পথরোধ করা হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থাতে গড়ে ওঠা রাষ্ট্রীয় খাত সমগ্র অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নেতৃত্বমূলক ভূমিকা নিচ্ছে।”
পার্টি-কংগ্রেস শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারের গৃহীত ব্যবস্থাসমূহের তাৎপর্যকে চিহ্নিত করে। এই ব্যবস্থাসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পরিবার, প্রতি জমির উর্দ্ধসীমা ১০০ বিঘা বা ৩৩ একরে বেঁধে দেয়া, ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির মালিকদের কর থেকে অব্যাহতি, খাজনার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত অসহনীয় ইজারাদারী প্রথার বিলোপ ইত্যাদি।
এই বছরগুলোতে একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল, বাংলাদেশ গণ-প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত শাসকদল আওয়ামী লীগ এবং কমিউনিস্ট পার্টি ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) যুক্তফ্রন্টে সম্মিলিত হয়েছিল।
কিন্তু এই সময়ে ইতিমধ্যেই নেতিবাচক ব্যাপারেও উদ্ভব ঘটে। পরের দিকে সেই ব্যাপারগুলো বৃহদাকার ধারণ করে। অর্থনৈতিক অবস্থা তখনও সঙ্গীন। যুদ্ধ, প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং ফসলহানির দরুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিদারুণভাবে পর্যুদস্ত হতে থাকে। কৃষি ও শিল্পের উৎপাদনে যুদ্ধপূর্বকালের স্তরের পুনঃপ্রতিষ্ঠাও খুবই কষ্টকর হয়ে ওঠে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল এবং অন্যান্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির ফলে অবস্থার আরও অবনতি হয়। অবশ্য, সরকারের তরফেও কিছু কিছু ব্যর্থতা ও ভুলভ্রান্তি এতে যুক্ত হয়েছিল। আমলা ও ধনিক বণিকদের দুর্নীতি ও মুনাফাবাজী বেশি বেশি করে জাঁকিয়ে উঠেছিল। শাসকদলের একটা অংশেও দুর্নীতি জাঁকিয়ে উঠেছিল।
জনগণের জীবনে সংকটের বোঝা এসব কিছুর দরুণ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। জনসাধারণের এবং বিশেষ করে শ্রমজীবীদের প্রকৃত আয় সামান্য থেকে সামান্যতর হতে থাকে, অপরদিকে জীবনধারণের ব্যয় বাড়তে থাকে। দেশের স্বাধীনতা এবং প্রগতির শত্রুরা পরিস্থিতির সুযোগ নিতে চেষ্টা করে। সাম্রাজ্যবাদের এজেন্টরা, মাওবাদী চীনের অনুসারীরা, চরমপন্থীরা এবং প্রতিক্রিয়াশীলেরা একযোগে দেশে একটা অরাজক অবস্থা সৃষ্টির প্রচেষ্টায় মেতে ওঠে। এরা এদের প্রচারাভিযানকে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং প্রতিবেশী ভারতের বিরুদ্ধে প্রধানত কেন্দ্রীভূত করে। এরা গুণ্ডাবাজীকে প্রশ্রয় দিয়ে, ব্যাঙ্ক লুঠ করে, পুলিশের থানা আক্রমণ করে এবং এমনকি খোলাখুলিভাবে গৃহযুদ্ধের হুমকি দিয়েও দেশে সন্ত্রাসের পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রয়াস পায়। চরম বাম এবং চরম দক্ষিণ উভয়েই আমাদের
লগইন করুন? লগইন করুন
03 Comments
Karla Gleichauf
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
M Shyamalan
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment
Liz Montano
12 May 2017 at 05:28 pm
On the other hand, we denounce with righteous indignation and dislike men who are so beguiled and demoralized by the charms of pleasure of the moment