আমরা পাঁচ বন্ধু এ পাড়ায় ক্ষুদে বিজ্ঞানীর দল হিসেবে পরিচিত। আমরা সবসময়ই নানা ধরনের গবেষণা নিয়ে মেতে থাকি। এসব গবেষণা করতে গিয়ে প্রতিদিনই কারো না কারো বাসায় কিছু না কিছু অঘটন ঘটছেই। তাই আমাদের নিয়ে বাবা মায়েদের অভিযোগের শেষ নেই। আমাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট রিমঝিম এবার ক্লাস ফোরে পড়ে। সেদিন রিমঝিম ডিমের উপর দিয়ে হাঁটার পরীক্ষা করতে গিয়ে বেশ কিছু ডিম নষ্ট করেছিল, সেজন্য সাজাও পেয়েছে। আমাদের নানা প্রশ্নের অত্যাচারে স্কুলের শিক্ষকরাও বিরক্ত। আমার বড় হয়ে অ্যাস্ট্রনট হওয়ার ইচ্ছা। মহাকাশচারী হয়ে গ্রহ থেকে গ্রহে ঘুরে বেড়াব আর গবেষণা করব।

আমাদের মধ্যে প্রকৃত বিজ্ঞানী সায়ন। ওর ঘরে ঢুকলেই তা বুঝতে পারা যায়। ওর ঘরে ওদের বাসার পুরনো টিভি, রেডিও সবই খোলা অবস্থায় পড়ে আছে। এবার সায়ন ক্লাস সিক্সে আর আমি ক্লাস সেভেনে। ছোট হলেও বহু জিনিস বুঝতে আমাকে ওর কাছেই যেতে হয়। আমাদের সবার সব ধরনের সমস্যার সমাধান করতে ওর কাছেই আমরা যাই। ছোটবেলা থেকেই ওর গবেষণা শুরু। লেবু দিয়ে ব্যাটারি তৈরি, গ্লাসে রঙধনু এমন কত কিছু যে ও করেছে বলে শেষ করা যাবে না। আমিও ওর মতো বাসায় গবেষণা করতে চাই কিন্তু পারি না। সেদিন টিভির রিমোট কন্ট্রোল নিয়ে একটু খোলার চেষ্টা করেছিলাম, তাই গত সাতদিন ধরে আমার খেলা বন্ধ। সায়নের বাবা-মা ওকে তেমন কিছু বলে না। ওকে গবেষণা করতে দেয়। এমনকি গবেষণার জন্য ও যা কিনতে চায় সেটা কিনেও দেয়। এ পর্যন্ত ও অনেক সায়েন্স ফেয়ারে অংশ নিয়েছে এবং প্রথম হয়েছে। তাই বিজ্ঞানী হিসেবে এলাকার সবাই সায়নকে চেনে।

ওর ঘরে চারদিকে এত যন্ত্রপাতি ছড়ানো ছিটানো থাকে যে আমাদের প্রায়ই তাতে লেগে হাত পা কাটে বা ইলেকট্রিক শক খেতে হয়। তবু আমাদের সবার গবেষণা কক্ষ হচ্ছে ওর ঘর। আমাদের মধ্যে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা সোমার। তাই সায়নের ঘরে গিয়ে পোকামাকড় নিয়ে মাঝেমধ্যেই ও কাটাকাটি শুরু করে। সেদিন বাগান থেকে এক কেঁচো নিয়ে এসে গবেষণা করছিল। বাসায় আমরা এসব গবেষণা করতে পারি না বলে সায়নের বাসাই আমদের শেষ আশা।

রোজকার মত দুপুরবেলা কারেন্ট চলে গেল। বাসায় গরমের মধ্যে বসে আছি। ইচ্ছা হচ্ছে সায়নদের বাসায় যাই। বিকালের আগে বাড়ি থেকে বের হতে পারবো না। বাবা- মায়ের কঠিন নির্দেশ। আমরা গত কয়েকদিন থেকে একটা সৌরকোষ বানাব বলে ভাবছি। কিন্তু কাজটা এখনো শুরু করতে পারিনি। একটা রৌদ্রজ্জ্বল দিনে, সূর্যের আলো পৃথিবীর প্রতি বর্গ কিমি এলাকায় প্রায় ১০০০ ওয়াট এর মত শক্তি দেয়। আমরা যদি এ শক্তিকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারতাম তবে বিদ্যুৎ শক্তির আর সমস্যা থাকত না। আমরা খুব সহজে প্রায় বিনা খরচে ঘরে ঘরেই আলো জ্বালাতে পারতাম। এমন গরমে বসে থাকতে হত না।

সৌরকোষগুলো হচ্ছে ফটোভলটাইক কোষ অর্থাৎ আলোক-ত্বড়িৎ কোষ যা আলোক শক্তিকে তড়িৎ-এ রূপান্তরিত করে। বেকরেল আলোর তড়িৎ বিভব ক্রিয়া লক্ষ্য করেন। ১৮৮৩ সালে সোনার প্রলেপ দেওয়া অর্ধপরিবাহী সেলেনিয়াম থেকে প্রথম সৌরকোষ তৈরি করেন চার্লস ফিটস। সৌরকোষ কীভাবে কাজ করে তা নিয়ে পড়ছিলাম কিন্তু ঠিক পরিষ্কার হচ্ছে না। আমাদের ক্ষুদে বিজ্ঞানী সায়নই পারবে সব ধারণা পরিষ্কার করতে। শেষ পর্যন্ত বাবা-মা কে না বলে ছুটলাম সায়নের বাসায়। বহুক্ষণ ধরে দরজা ধাক্কাচ্ছি কেউ খুলছেই না? সায়নের বাবা-মা দুজনই চাকরি করে। বাসায় সায়ন এখন একা। নিশ্চয়ই কোনো গবেষণা করছে, তাই কোনো আওয়াজই তার কানে ঢুকছে না। অপেক্ষা করতে করতে দেখি সোমা, রিমঝিম, অনন্ত চলে এসেছে। এখন আমি, সোমা, রিমঝিম, অনন্ত চারজনই দাঁড়িয়ে আছি দরজার সামনে। শেষ পর্যন্ত সায়ন

লগইন করুন? লগইন করুন

বাকি অংশ পড়তে,

সাবস্ক্রাইব করুন

প্রারম্ভিক অফারটি


লেখাটি পড়তে
অথবা

সাবস্ক্রাইব করে থাকলে

লগইন করুন

You Might Also Like

03 Comments

Leave A Comment

Don’t worry ! Your email address will not be published. Required fields are marked (*).

Get Newsletter

Advertisement

Voting Poll (Checkbox)

Voting Poll (Radio)

Readers Opinion