এম এ আজিজ মিয়া

বিংশ শতাব্দির শুরুতে এদেশে এমন একজন অসাধারণ মেধাবী মানুষের আবির্ভাব ঘটেছিল যিনি সারা কর্মপ্রয়াসেও ছিলেন অনন্য। কিশোরগঞ্জ জেলার একটি অজ পাঁড়াগায়ে জন্মগ্রহণ করেও সারা ভারতবর্ষে মেধা ও পাণ্ডিত্যের জন্য বিশেষখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রতিটি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। চাকরি কারলে তিনি কি না হতে পারতেন। কিন্তু সেদিকে না গিয়ে, তিনি আত্মনিয়োগ করেছিলেন কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের মুক্তি সংগ্রামে। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যোগদান করে একটানা প্রায় আটবছর জেল খেটেছেন এবং জেলে বসেই লিখেছেন মার্কসবাদ সংক্রান্ত পান্ডিত্যমুলক অনুবাদ করেছেন এবং ইংরেজি ভাষাও গ্রন্থ রচনা করে সুখ্যাতি অর্জন করেছেন্ তাঁর গ্রন্থ আজও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য ও রেফারেন্স হিসেবে গৃহীত। অকাল প্রয়াত এই মনীষীর শেষ আটটি তিনি কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হয়ে কর্ম ও চিন্তা জগৎ থেকে এতটুকু বিচ্যুত হনন্ িতাঁর জন্ম হয়েছিল ১৯০৪ সালের ৩০সেপ্টেম্বর এবং মারা যান ১৯৫২সালের ৬মে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৮বছর। (গোগোজ স্কুলের ছাড়পত্র ও পুলিশ রিপোর্ট অনুয়ায়ী)

কমরেড রেবতীমোহন বর্মন জন্মগ্রহণ করেন বাংলার বিখ্যাত বর্মন রাজবংশে। তাঁর পৈতৃকবাড়ী কিশোরগঞ্জ জেলার শিমুলকান্দি গ্রমে। তাঁর বাবার নাম হরমোন বর্মন রায়। তাঁর মায়ের নাম রুক্সিনীময় দেবী। তাঁদের পাঁচ ভাই ও সাতবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। তাঁর ঠাকুরদা রাধারাম প্রসাদ বর্মন রায়। ইংরেজ আমলে বৃহৎ তালুতেকের অধিকারী হন তিনি। ইংরেজরা তাঁকে ‘রায়’ ইপাধীতে ভ’ষিত করেন। পিতা পেশায় ছিলেন আইনজীব্ িবাজিতপুর দেওয়ানী আদালতে তিনি ওকালতি করতেন। কমরেড রেবতীমোহনের অপর ৪ভাই — যতীন্দ্রমোহন, রালমোহন, মোহিণীমোহন ও মনোমোহন। যতীন্দ্রমোহন বর্মন বাজিতপুর আইনপেশায়, লালমোহন বর্মন কিশোরগঞ্জে আইনপেশা(মোক্তার) ও মোহনীমোহন বর্মন কুমিল্লা কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। আর মনোমোহন বর্মন শিমুলকান্দি ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ও ঋণসালিশী বোর্ডেও চেয়ারম্যান হিসেবে জনহিতকর কাজে নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু অনন্য মেধাবী কমরেড রেবতীমোহন বর্মনবিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি লাভ করেও পান্ডিত্যের অধিকারী হয়েও নিজেকে সপে দিয়েছিলেন কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের সেবায় । সে কাহিনী যেমন চাঞ্চল্যকর, তেমনি হৃদয়স্পর্শ।

কমরেড রেবতীমোহন বর্মনের শিক্ষাজীবন শুরু হয় কুমিল্লার ঈশ্বর পাঠশালায়। প্রাথমিক শিক্ষালাভ করেন সরাইলের চুন্টা স্কুলে। মাধ্যমিক শিক্ষা শুরু ঢাকার পোগোজ স্কুলে এবং পরে কুমিল্লা কলেজিয়েট স্কুলে। সেখানে অগ্রজ মোহনীমোহন বর্মন শিক্ষকতা করেন। সে সময় তিনি ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে যোগ দেয়ার কারণেঅবোনিতত ঘোষিত হন।তিনি কিছুদিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও লেখাপড়া করেছেন।১৯২১ সালের পর অসহযোগ আন্দোলন কিছুটা হয়ে পড়লে তিনি ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেয়ার জন্য কিশোরগঞ্জ বিভিন্ন স্কুলে চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনো স্কুল তাঁকে ভর্তি করতে রাজী হয়নি। অবশেষে ১৯২১ সালের ১৫সেপ্টেম্বর তিনি কিশোরগঞ্জ আজিমতহাইস্কুলে ভর্তি হন। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ১৬বছর ১১মাস ১৫দিন। সে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন ..বসন্ত কুমার চক্রবর্তী। তিনি নিজেও ছিলেন পন্ডিত ও স্বদেশী আন্দোলনের একজন অনুরক্ত ব্যক্তিত্ব। কমরেড রেবতীমোহন বর্মনছাত্রপত্রটি সংগ্রহ করেছিল পোগোজ স্কুল থেকে। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৬বছর ১১মাস ১৫দিন।সকলকে চমকে দিয়ে ১৯২২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মেট্রিকুলেসান পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন্ তারপর প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আইএ পরীক্ষায় প্রথম স্থান ,সোন্টপাত্র কলেজ থেকে ইংরেজি বিষয়ে বিএ(সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে জগৎতারিণী স্বর্ণপদক লাভ করেন(জেলে ছিলেন) এবং ১৯২৯ সালে অর্থনীতিতে দ্বিতীয় শ্রেনীতে এম এ প্রথম স্থান অধিকার করে জগৎতারিণী স্বর্ণপদক লাভ করেন। এমন ঈর্ষণীয় স্বর্ণোজ্বল ফলাফল করে কেউ কোনদিন নিজেকে রাজনীতিতে সর্বোচ্চ ত্যাগের পথে পা বাড়িয়েছেন তা সমাজে দেখা যায় না, কল্পানাও কেউ করতে পারেন না।

কমরেড বেরতীমোহন বর্মনের জীবনের গোটাটই রাজনৈতিক জীবন। স্কুলে পড়াকালে যোগদান করেছিলেন ... হেমচন্দ্র..(১৮৮৪-১৯৮৯) বেঙ্গল ভলান্টিয়াবিভৃতে এবং ঢাকা অবস্থানকালে

লগইন করুন? লগইন করুন

বাকি অংশ পড়তে,

সাবস্ক্রাইব করুন

প্রারম্ভিক অফারটি


লেখাটি পড়তে
অথবা

সাবস্ক্রাইব করে থাকলে

লগইন করুন

You Might Also Like

03 Comments

Leave A Comment

Don’t worry ! Your email address will not be published. Required fields are marked (*).

Get Newsletter

Advertisement

Voting Poll (Checkbox)

Voting Poll (Radio)

Readers Opinion