নিউটন এক দিন আপেল ফল ভূমিতে পড়িতে দেখিয়া হঠাৎ আবিষ্কার করিয়া ফেলিলেন, পৃথিবীর আকর্ষণশক্তি আছে। অমনই মাধ্যাকর্ষণের অস্তিত্ব বাহির হইল ও নিউটনের নাম ইতিহাসে চিরস্থায়ী হইয়া গেল। এবং তদবধি আপেল ফল কেন পড়ে, জিজ্ঞাসা করিলেই প্রত্যেক পাঠশালার বালকে উত্তর দেয়, মাধ্যাকর্ষণই উহার কারণ। গল্পটা কত দূর সত্য, সে বিষয়ে অনেকে সন্দেহ করেন। গল্পটা সত্যই হউক আর মিথ্যাই হউক, আপেল ফল যে কেন ভূমিতে পড়ে, তাহার প্রকৃত কারণ সম্বন্ধে বোধ করি, কাহারও আর সন্দেহ নাই।

মানুষের মন সর্ব্বদাই কারণ অনুসন্ধান করিতে চায়; এবং শুনা যায়, এই জন্যেই জীবসমাজে মনুষ্যের স্থান এত উচ্চে। কিন্তু সেই কারণ-অনুসন্ধানস্পৃহাটা যদি এত সহজে পরিতৃপ্তি লাভ করে, তাহা হইলে বলিতে হইবে, জীবনসমাজে শ্রেণিবিভাগ কার্য্যটার এখনও পুনঃসংস্করণ আবশ্যক; মনুষ্যকে অত উচ্চে তুলিলে চলিবে না।

নিউটনের বহু পূর্ব্বে ভাস্করাচার্য্য অথবা অন্য কোন পণ্ডিত পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ আবিষ্কার করিয়াছিলেন বলিয়া যাহারা সগর্ব্বে সংস্কৃত শ্লোকের প্রমাণ আওড়ান, তাহাদিগকে দুঃখের সহিত বলিতে বাধ্য হইতেছি, ভাস্করাচার্য্যই কি, আর নিউটনই কি, কোন পণ্ডিতই পৃথিবীর আকর্ষণশক্তি অস্তিত্ব নূতন আবিষ্কার করেন নাই। নিউটনের ও ভাস্করের বহু পূর্ব্বে এই আকর্ষণ আবিষ্কৃত হইয়াছিল। যে জম্বুক আঙ্গুরের প্রত্যাশায় উর্দ্ধমুখে অপেক্ষা করিয়াছিল, সেও জানিত যে, আঙ্গুর ফল পৃথিবীর দিকে আকৃষ্ট হয়। অপিচ, আমার এই উক্তিতে নিউটনের ও ভাস্করের মহিমান্বিত যশোরাশির কথিকামাত্র অপচয় ঘটিবার সম্ভাবনা নাই।

প্রকৃত কথা এই যে, আপেল ফল যে কি কারণে ভূপতিত হয়, এ পর্যন্ত তাহা অনাবিষ্কৃত রহিয়াছে।

নিউটন আপেল ফলের ভূপতনের কারণ নির্দেশ করেন নাই, তবে তিনি যে একটা প্রকাণ্ড কৰ্ম্ম সাধন করিয়া গিয়াছেন, সেটার তাৎপর্য্য বুঝিবার চেষ্টা পাওয়া উচিত।

আপেল ফল যে বৃত্তচ্যুত হইলেই পৃথিবীর দিকে দৌড়ায়, ইহা নিউটন যেমন দেখিয়াছিলেন, মনুষ্য হইতে জম্বুক পর্যন্ত সকলেই তাহা চিরকাল ধরিয়া

You Might Also Like

03 Comments

Leave A Comment

Don’t worry ! Your email address will not be published. Required fields are marked (*).

Get Newsletter

Advertisement

Voting Poll (Checkbox)

Voting Poll (Radio)

Readers Opinion